বরগুনার তালতলীতে টেংরাগিরি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতরে গড়ে তোলা সোনাকাটা ইকোপার্ক চালুর পাচঁ থেকে ছয় বছর আগেই মুখ থুবড়ে পড়ছে। সোনাকাটা ইকোপার্কের ভিতরে হরিণগুলো দিন দিন হাড়িয়ে যাচ্ছে। হরিণগুলো হাড়িয়ে গেলে পর্যটকদের আকর্ষণ ইকোপার্কের প্রতি কমে যাবে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সোনাকাটা ইকোপার্কের ভিতরে হরিণ রাখার চারপাশের বেষ্টনী হেলে গেছে। আবার বেষ্টনী গুলো মাঝে মাঝে ভেঙ্গে গেছে। বেষ্টনী রডগুলো মরিচা ধরে গেছে। ভিতরের রাস্তাগুলো খুব খারাপ। কোথাও ইটের সলিং ওঠে গেছে। ইটের সলিং এর মাঝে মাঝে ছোট ছোট কাঠের পুল রয়েছে। কোথাও সুপারি গাছ দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় পুল রয়েছে। শুরু থেকে বিভিন্ন জাতের প্রজাতি আনা এখন আর তেমন দেখা মিলছে না ও একদিকে দর্শনার্থীরা কমছে। বনের ভিতর দিয়ে কষ্টে প্রায় চার কিলোমিটার হেটে গেলে দেখা মিলবে সমুদ্র সৈকতের। সেখানে গিয়ে দেখা যাবে সূর্যাস্ত ও সূর্য উদয় এক মনোরম দৃশ্য। বনের ভিতর দিয়ে বয়ে গেছে ছোট ছোট খাল এবং বিভিন্ন প্রজাতির গাছ দেখা যাবে। বনের কোনো সংরক্ষণের নেই। সংরক্ষণের অভাবে বনের সৌন্দর্য আস্তে আস্তে শেষ হয়ে যাচ্ছে। হরিণগুলো রাখার কোনো বন কর্মকর্তাদের তৎপরতা নেই।
জানা গেছে, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় অধীনে টেংরা-গিরি বনাঞ্চলের সখিনা বিটে এ সোনাকাটা ইকোপার্ক প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে এই ইকোপার্কে ৮টি হরিণ, ২৪টি শুকুর, ৮টি চিতাবাঘ, দুটি অজগর ও দুটি সাজারু ছাড়া হয়। এছাড়াও তিনটি কুমির নিয়ে একটি কুমির প্রজনন কেন্দ্র ও রয়েছিল। এখন তেমন কোনো হরিণ বা অন্যান্য কোনো জীব দেখা যাচ্ছে না। ভবিষ্যত দুই একটা হরিণের দেখা যায়। হরিণগুলো রক্ষা করার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় সে গুলো বেড়িয়ে যায়। এখন পর্যন্ত বন বিভাগ হরিণগুলো উদ্ধার করতে পারে নি। বন বিভাগের দায়িত্ব হীনতায় দায়ি করছে স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, জোয়ার ভাটার কারণে সোনাকাটা ইকোপার্কের অবস্থা বেহাল। শীঘ্রই ইকোপার্কের কোনো কাজ না করলে অচিরেই ধ্বংস হবে। বন বিভাগের অব্যবস্থাপনায় ঐতিহ্য ধরে রাখা সম্ভব না। হরিণগুলো বনের গহীনে চলে গেছে এবং শিয়াল ও হিংস্র প্রানীর খাওয়ার রুপান্তরিত হয়ে গেছে। ইকো পার্ক রক্ষায় এখনই পশু-পাখির সংখ্যা বাড়াতে উদ্যোগ না নিলে আগামীতে পর্যটকশূন্য হয়ে পড়বে এটি দ্রুত সংস্কারের দাবি করছি।
তালতলী রেঞ্জের সখিনা বিট কর্মকর্তা মো.বেলায়েত হোসেন বলেন, আমি আসছি তিন মাস হয়েছে। গহীন জঙ্গলে অনেক হরিণ অবাধে ঘুরছে। স্থানীয় অসাধু কিছু লোক হরিণ শিকার না করতে পারে সে বিষয় আমরা তৎপর রয়েছি। আমরা বন রক্ষা করার জন্য সার্বক্ষনিক তত্ত্বাবধান করছি।
তালতলী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো.মনিরুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর হরিণের বেষ্টনী সংরক্ষণের জন্য বরাদ্দ কম বেশী হয়ে থাকে। এ বছরের বরাদ্দ দিয়ে চার পাশের বেষ্টনীগুলোর কাজ করবো।
আনন্দবাজার/শাহী/নাদিম