বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে কুমিল্লা পুলিশ লাইনস প্যারেড মাঠে নির্মাণ করা হয়েছে ১০০ ফুট দৈর্ঘ্যের নৌকা ‘বঙ্গবন্ধু মঞ্চ-তরণি’। মঞ্চটি মহান স্বাধীনতার ভাবাদর্শে দীর্ঘ ৯ মাস (মার্চ থেকে ডিসেম্বর) সময় নিয়ে নানা কারুকাজে নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। আলোক সজ্জায় সজ্জিত মঞ্চটি নজর কাঁড়ছে পুলিশ লাইনস সড়কে চলাচলকারী মানুষের।
সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, কুমিল্লা পুলিশ লাইনস মাঠের উত্তর প্রান্তে ১০০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩০ ফুট প্রস্থের একটি স্থায়ী নৌকা ও এর মধ্যে মঞ্চ নির্মাণের কাজ শুরু করা হয় গত বছরের মার্চ মাসে। এটা নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয় বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে। নৌকাটিতে রয়েছে ৪০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২৮ ফুট প্রস্থের একটি আধুনিক মঞ্চ। মঞ্চের দুই পাশে রয়েছে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত দুটি গ্রিনরুম, ওপরে সুবিন্যস্ত মেটালিক শেড ও ট্রাস, রয়েছে বাংলাদেশের মানচিত্রখচিত প্রথম পতাকার আদলে ১৬ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১২ ফুট প্রস্থের নৌকার পাল। এতে রয়েছে ১২ ফুট উচ্চতার বঙ্গবন্ধু ও দুই জন মাঝির ভাস্কর্য। মঞ্চের পেছনের ২৩ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪ ফুট প্রস্থের ব্যাকড্রপে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের ভাস্কর্য। মঞ্চটিতে নানা রঙের আলোকসজ্জার এক মনোহর বৈচিত্র্য সন্নিবেশ করা হয়েছে। রাতে বর্ণিল আলোকসজ্জার নৌকা-মঞ্চের ঝলমলে অপরূপ দৃশ্য যে কাউকে মুগ্ধ করে। ১ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে এই মঞ্চ নির্মিত হয়েছে।
যুদ্ধকালীন ভারতের ত্রিপুরার যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক দেবব্রত দত্ত গুপ্ত (৮৫) বলেন, ‘নৌকার মধ্যে বঙ্গবন্ধুর নান্দনিক ভাস্কর্য এক অসাধারণ কাজ। মহান স্বাধীনতার চেতনাসমৃদ্ধ এটাই প্রথম ও শ্রেষ্ঠ স্থাপনা। এ ধরনের মঞ্চ প্রতিটি জেলায় নির্মাণ করা গেলে নতুন প্রজন্মের মধ্যে দেশপ্রেম ও দেশের প্রতি দায়িত্ববোধ বৃদ্ধি পাবে।’
মঞ্চ নির্মাণের উদ্যোক্তা সদ্য বিদায়ী কুমিল্লা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘মুক্তিসংগ্রামের প্রতীক হচ্ছে নৌকা, অর্থাৎ তরণি। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ১০০ ফুট দৈর্ঘ্যের নৌকাসদৃশ এই মঞ্চ নির্মাণ করে এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু মঞ্চ-তরণি’। নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত করতেই এই মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, দৃষ্টিনন্দন এই মঞ্চটি গত ৩০ ডিসেম্বর বিকেলে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
আনন্দবাজার/শাহী/আলাউদ্দিন