প্রাকৃতিক ও নান্দনিক শহরের দিক থেকে নোয়াখালীর মাইজদী শহর অতুলনীয়। সৌন্দর্যের দিক থেকে শহরটিকে দৃষ্টিনন্দন করে তুলেছে মাইজদী পৌর পার্ক ও বড় দীঘি। অবসর সময় কাটানোর জন্য সত্যি যার তুলনা হয় না। প্রতিদিন এখানে ছুটে আসছেন সব বয়সের হাজারো মানুষ।
উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম থেকে মেঘনা নদী অবিশ্বাস্য রাক্ষুসী রূপ ধারণ করে। নদীগর্ভে বিলীন হতে শুরু করে নোয়াখালীর বিস্তৃত জনপদ এবং হাজার বছর ধরে গড়ে উঠা সমৃদ্ধশালী ঐতিহ্যের সব চিহ্ন।
মূল নোয়াখালী মেঘনা আর সাগরে বিলিন হয়ে গেলে বৃটিশদের পরিকল্পনায় মাইজদীকে কেন্দ্র করে নতুন নোয়াখালীর গোড়াপত্তন করা হয়।
শহরের প্রাণ কেন্দ্রে প্রায় ১৬ একর জুড়ে কাটা হয় এক বিশাল দীঘি। ১৯৫০-এর দশকে নোয়াখালী শহর নদী ও সাগরে বিলীনের হাত থেকে রক্ষার জন্য তৈরি এই দিঘীটি বর্তমানে ওই অঞ্চলের একটি মুক্ত জলাধার হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। লোক মুখে যা ‘বড় দীঘি’ নামে পরিচিত হয় (বর্তমানে কোর্ট বিল্ডিং দীঘি)।
দীঘির চতুর্দিকে চক্রাকারে বানানো হয় ইট সুরকীর রাস্তা। সে রাস্তাকে ঘিরে বাংলো প্যাটার্ণে তৈরী হয় সরকারী সব দপ্তর। রাস্তার পাশে রোপণ করা হয় বকুল, জারুল, কৃষ্ণচূড়া সহ নানা গাছগাছালি।
পরবর্তীতে দীঘির পাশের এই ছায়া সুশীতল স্থানকে সংস্কার করে তৈরি করা হয় পার্ক- যা “পৌর পার্ক” নামে পরিচিত। দীঘিতে ভাসমান লাল শাপলা নান্দনিক এ সৌন্দর্যে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে।
এছাড়া দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে আধুনিক পৌর পার্ক ক্যাফটেরিয়া। এখানে কফি, মিনি চাইনিজসহ সুস্বাদু নানা খাবারের আয়োজন রয়েছে।
বর্তমানে এটি নোয়াখালীবাসীর অবসর সময় কাটানোর সবচেয়ে পছন্দের স্থানে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন শত শত প্রকৃতিপ্রেমিরা মনকাড়া এ স্থানটিতে ছুটে আসে। পাখির মিষ্টিমধুর গুঞ্জন আর অগণিত মানুষের আগমনে সকাল-সন্ধা মুখরিত থাকে মাইজদী বড়দীঘি ও পৌর পার্ক।
আনন্দবাজার/শাহী/গাজী