ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল খুলেই স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়া সহ চার দফা দাবিতে গত বুধবার থেকে শুরু হওয়া ছাত্র অধিকার পরিষদের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থীর অবস্থান কর্মসূচি আজ শনিবারও চলছে।
অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পরীক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে আবাসিক হল খুলে দেওয়াসহ চার দফা দাবিতে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাষ্কর্যে অবস্থান নিয়ে এ কর্মসূচী শুরু করেন তারা।
তাদের অন্যান্য দাবিগুলো হলো—পরীক্ষার আগে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে, প্রয়োজনে মেকআপ ক্লাসের ব্যবস্থা করতে হবে; ডিভাইস সমস্যায় থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিশ্রুত ডিভাইসের ব্যবস্থা করতে হবে এবং সব শিক্ষার্থীকে ইন্টারনেট প্যাকেজ কেনার জন্য ন্যূনতম মাসিক খরচ দিতে হবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পরীক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে আবাসিক হল খুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের পরামর্শ, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে করোনা ইউনিট স্থাপন এবং পর্যাপ্ত অক্সিজেনের ব্যবস্থা করতে হবে। বহিরাগত প্রবেশ সীমিত করতে হবে। হলে প্রবেশ ও বের হওয়ার ক্ষেত্রে কঠোর তল্লাশি ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে। খাবার বাক্সে করে কক্ষে নিয়ে যেতে হবে। প্রতিটি অনুষদে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। অসুস্থ শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে ভিন্ন নীতিমালা প্রণয়নসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, নেতা শাকিল উজ্জামান, তারেক রহমানসহ ছয়জন এই কর্মসূচিতে আছেন। অবস্থানে থাকা শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সুস্পষ্ট বক্তব্য না পাওয়া পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচি চলবে।
এর আগে গত ১০ ডিসেম্বর আবাসিক হল বন্ধ রেখেই আগামী ২৬ ডিসেম্বর থেকে অনার্স শেষ বর্ষ ও মাস্টার্সের আটকে থাকা পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে সাধারণ শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের বিভিন্ন প্রতিবাদী কর্মসূচির মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জানিয়ে দিলেন আবাসিক হল খুলতে জাতীয় সিদ্ধান্তের প্রয়োজন।
উপাচার্যের এমন বক্তব্যের পর অবস্থান কর্মসূচী অব্যাহত থাকবে কিনা জানতে চাইলে পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা দৈনিক আনন্দবাজারকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। আমরা অবস্থান কর্মসূচী অব্যাহত রাখবো ৷ এই কর্মসূচীর মাধ্যমে আমরা শুধু বিশ্ববিদ্যালয় মেসেজ দিচ্ছি না; বরং জাতীয় পর্যায়ে যারা এটির সাথে সংশ্লিষ্ট তাদেরকেও আমরা এই মেসেজ দিতে চাচ্ছি যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রত্যেকে জুনিয়র স্কলার। এই শিক্ষার্থীরা চাচ্ছে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পরীক্ষার্থীদের জন্য হলগুলো খুলে দিয়ে পরীক্ষা নেয়া হোক। আমরা মনে করি এটাই বেস্ট অপিনিয়ন। এর উপরে আর কোন বিশেষজ্ঞদের মতামতের প্রয়োজন নেই।
বিন ইয়ামিন বলেন, আমরা জানতে পেরেছি আজকে প্রভোস্ট কমিটির মিটিং রয়েছে। মিটিং থেকে যদি শিক্ষার্থীদের পক্ষে কোন সিদ্ধান্ত না আসে তাহলে আমরা কঠোর কর্মসূচীর ঘোষণা করব।
আনন্দবাজার/শাহী/মনিরুল