ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই তিস্তা ব্যারেজে পাথরবোঝাই ট্রাক চলাচল

নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই তিস্তা ব্যারেজে পাথরবোঝাই ট্রাক চলাচল

দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজ হুমকির মুখে। দায়িত্বে থাকা আনসার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কতিপয় কর্মকর্তারা নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে উৎকোচের বিনিময়ে প্রতিদিন প্রায় শতাধিক পাথর বোঝাই মাত্রাতিরিক্ত ওজনের ট্রাক দিনে ও রাতের আধারে পারাপারের সুযোগ করে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, তিস্তা ব্যারাজের উপর দিয়ে ২০ টনের বেশি ওজনের যানবাহন চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেটি উপেক্ষা করে ব্যারাজের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার জোগসাজসে ১০ চাকার অতিরিক্ত মালবোঝাই ট্রাকও চলাচল করে প্রতিনিয়ত। এতে ব্যারাজের ০২, ২০, ২১ ও ২৪ নম্বর গেটের উপরের প্লাস্টারে ফাটল ধরে। ফলে ব্যারাজের স্থায়ীত্ব রক্ষায় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ২০১৪ সালের ২৫ নভেম্বর তিস্তা ব্যারাজের উভয় পাশে সাইনবোর্ড লাগিয়ে সকল প্রকার ভারী যান চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। ওই সময় ব্যারাজের দু‘দিকের প্রধান ফটকও বন্ধ রাখা হয়। আর সড়কে বসানো হয় লোহার খুঁটি। যা বর্তমানে ইট-পাথরের পিলারের রুপান্তারিত হয়েছে। কিন্তু সেই পিলারের মাঝখানে ফাঁকা অংশ দিয়ে শুধুমাত্র হালকা যান চলাচল করার কথা থাকলেও বর্তমানে পাথর বোঝাই ট্রাক পারাপার হচ্ছে। আর অব্যাহত এই ভারী যানবহন চলাচল করছে ব্যারাজের নিরাপত্তায় থাকা আনসার বাহিনী ও প্রবেশদ্বারে পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যদের সামন দিয়ে। অথচ তারা দেখেও না দেখার ভান করে চলছে। ফলে ব্যারাজটি নতুন করে হুমকির মুখে আবারো পড়ছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কিছুদিন আগেও তিস্তা ব্যারেজের ওপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। কিন্তু গত এক মাস ধরে আবারও পাথরবোঝাই ট্রাক চলতে শুরু করেছে। এখন তিস্তা ব্যারেজের ওপর দিয়ে রাত-দিন সব সময় পাথরবোঝাই ট্রাক চলছে। অজানা কারণে ট্রাক চলাচল বন্ধে কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। একটি চক্র সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকার বিনিময়ে এই সুবিধা করে দিচ্ছে। তারা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত বলে কেউ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার সাহস করে না।

ট্রাকচালক মনিরুল ইসলাম জানান, বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে তিস্তা ব্যারেজ কাছে এবং সময় বাঁচায়। লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তা সড়ক সেতু হয়ে নীলফামারী, রংপুর ও দিনাজপুর যেতে প্রায় ১০০ কিলোমিটার বেশি ঘুরতে হয়। অথচ সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা দিলেই ব্যারেজ পার হওয়া যায়। তাই এদিক দিয়ে অনেকেই যাতায়াত করে প্রতিদিন।

তিস্তা ব্যারেজে পানি উন্নয়র বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) এ কে এম শামসুজ্জোহা জানান, তিস্তা ব্যারেজের ওপর দিয়ে শুধু হালকা যান চলাচলের অনুমতি রয়েছে। মাঝে মাঝে ভুট্টা ও ধানবোঝাই কিছু ট্রাক চলে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মচারীরা তা নজরদারি করেন। পাথরবোঝাই ট্রাক চলা-চল করে এমন তথ্য তার কাছে নেই। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আনন্দবাজার/শাহী/জে আই

সংবাদটি শেয়ার করুন