বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাণীশংকৈলে নেকমরদ হাটে মেলার নামে অতিরিক্ত টোল আদায়

রাণীশংকৈলে নেকমরদ হাটে মেলার নামে অতিরিক্ত টোল আদায়

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার সব চেয়ে বড় পরশু নেকমরদ হাটে মেলার নামে চলছে অতিরিক্ত টোল আদায়। এদিন হাটে আসা গরু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রবিবার (১৩ ডিসেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে এসব তথ্য পাওয়া যায়।

হাটে গরু প্রতি ২৩০ টাকা ও ছাগল প্রতি ৯০ টাকা টোল নেওয়ার সরকারি নিয়ম থাকলেও বর্তমানে হাটের দায়িত্বে থাকা ইজারাদার তা না মেনে নিজ ক্ষমতার দাপটে গরু প্রতি ৩৬০ টাকা ও ছাগল প্রতি ১৫০ টাকা টোল আদায় করছে। হাটে যশোর ও বগুড়া থেকে আসা দুুজন গরু ব্যবসায়ী সোহেল ও আঃ মজিদ অভিযোগ করে বলেন, সরকারি নিয়ম ভঙ্গকরে হাট কমিটির লোকজন এভাবে আমাদের কাছ থেকে বেশি টাকা নেওয়ায় আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। আজকে আমারা দুু’জনে ১৩ টি গরু ক্রয় করেছি সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রতি গরুর লেখায় ২৩০ টাকা কিন্তু আমাদের কাছে নিয়েছে ৩৬০ টা এতে ১৩০ টাকা করে মোট ১৬৯০ টাকা বেশি নেওয়ায় আমারা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। এভাবে ক্ষতি মেনে নেয়া যায়না, তাই প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছি। গরুর রশিদ লেখক সুন্দর পুর গ্রামের সুরেন চন্দ্র রায়কে বেশি টোল আদায়ের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে, তিনি বলেন, নেকমরদ ওরশ মেলার কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকের নির্দেশে ৩৬০ টাকা করে নিচ্ছি। হাটে আস অনেকেই বলেন, কোনভাবেই সরকারি নিয়ম পালন করছেন না হাট ইজারাদারসহ সংশ্লিষ্টরা।

অতিরিক্ত টোল আদায়ের ব্যপারে নেকমরদ ইউপি চেয়ারম্যান ও মেলা কমিটির সভাপতি এনামুল হকের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন, আমরা সরকারি খাস আদায় করছি। প্রত্যেক হাটে ইউএনও অফিসে ২ লক্ষ ২০ হাজার টাকা জমা দিচ্ছি। এবার তো করোনা ভাইরাসের কারণে মেলা হচ্ছে না। তাহলে সংশ্লিষ্ট ইজারাদার ছাড়া আপনারা টোল আদায় করছেন কেন?

আরও পড়ুনঃ  রান্নায় অতিরিক্ত তেল স্বাস্থ্যের ঝুঁকি বাড়াঁয়

এমন প্রশ্নে তিনি বলেন আমি জেলা প্রশাসক স্যারের কাছে মৌখিক অনুমতি নিয়েছি যেহেতু এবার মেলা হবে না তাই ৫ টি হাট আমরা খাস আদায় করবো, তাছাড়া পূর্বের ন্যায় হাট ইজারাদারকে ৩ লক্ষ টাকা আমরা দিয়ে থাকি। তিনি আরো বলেন, আমরা গতবারের মতো ১৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ৫ টি হাট সিডিউল করে টাকা গুলো সংশ্লিষ্ট তফসিল অফিসে জমা করি, সবকিছু বাদ দিয়ে আমাদের ২ লক্ষ টাকা লাভ টিকতে পারে ।

এ দিকে সংশ্লিষ্ট এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে বলেন, মেলার নামে এখানে এসব চলছে। শুধুমাত্র ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে হাটে আসা বিভিন্ন ক্রেতা ও বিক্রেতারা। খবর নিয়ে জানা গেছে এবছর করোনা ভাইরাসের কারণে প্রশাসন কর্তৃক মেলার কোন অনুমিত দেয়া হবে না। অথচ মেলা কমিটি হাটে অতিরিক্ত টোল আদায় করে যাচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির জানান আমি সদ্য যোগদান করেছি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নই, তবে সরকারি নিয়ম বহির্ভূত পশুর হাটে অতিরিক্ত টোল আদায় করে থাকলে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহরিয়ার আজম মুন্নার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যপারে আমরা অবগত নই কিন্তু হাটে অতিরিক্ত টোল আদায় করলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আনন্দবাজার/শাহী/কবির

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন