বুকফাটা কান্না, আর্তনাদ আর আহাজারিতে ভরা লাখো মানুষের শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় চির বিদায় নিলেন সৈয়দপুর উপজেলা তথা নীলফামারী জেলার গণমানুষের নেতা আখতার হোসেন বাদল। তিন দফার জানাযা শেষে শ্রদ্ধা জানাতে আসা অজস্র মানুষের ঢলই তার প্রমাণ দিয়েছে।
আত্মীয়-স্বজন, আপনজন ও দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহকর্মীদের কাঁদিয়ে ও লাখো মানুষের হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে রবিবার বাদ নামাজে যোহর নীলফামারী সদর উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের বেড়াকুটি গ্রামে তার প্রতিষ্ঠিত মসজিদ চত্ত্বরে চিরনিদ্র্রায় শায়িত হলেন তিনি। তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বাংলাদেশ সড়ক পরিহন শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠিক সম্পাদক, রংপুর বিভাগীয় কমিটির সভাপতি, নীলফামারী জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি, সৈয়দপুর উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ও সৈয়দপুর পৌর সভার সাবেক মেয়র আখতার হোসেন বাদল গত ১২ ডিসেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রংপুর সম্মেলিত সামরিক হাসাপাতালে (সিএমএইচ) মারা যান।
রবিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয় সৈয়দপুর রেলওয়ে মাঠে। এখানে জানাজার পূর্বে মরহুমের কফিনে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন নীলফামারীর ৪ আসনের সাংসদ আহসান আদেলুর রহমান, নীলফামারী সদর আসনের সাংসদ ও সাবেক সংস্কৃতিক মন্ত্রীর পক্ষে আওয়ামীলীগের সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক এ্যাড, মমতাজুল হক, সংরক্ষিত আসনের এমপি রাবেয়া আলিমের পক্ষে তার ছেলে প্রকৌশলী একে এম রাশেদুজ্জামান রাশেদ, জেলা পরিষদের চেয়াম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন, সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদের চেয়াম্যান মোখছেদুল মোমিন, সৈয়দপুর পৌর মেয়র আমজাদ হোসেন সরকার, ডিমলা উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা তবিবুল ই্সলাম, সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নাসিম আহমেদ, সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহসিনুল হক মহসিন, কিশোরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, নীলফামারী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুজার রহমান, ডোমার উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আকতার হোসেনসহ স্বেচ্ছাসেবকলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষকলীগ, জাতীয় পাটি ও তার অঙ্গ সংগঠনগুলো।
দুপুর সাড়ে ১২ টায় দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয় তার দীর্ঘজীবনের শ্রমিক রাজনীতির চত্ত্বর সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে।
বেলা ৩ টায় মরহুমের গ্রামে বাড়ি বড়ুয়া হাটে তৃতীয় জানাজার পর সেখানে সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাঁকে সমাহিত করা হয় তার প্রতিষ্ঠিত মসজিদ চত্ত্বরে। জননেতা আখতার হোসেন বাদলের মৃত্যুতে শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন রাজনীতিক, শ্রমিকনেতা, সাহিত্যিক, সাংবাদিকসহ সকল শ্রেণির পেশার মানুষ।
এদিকে নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিনা ঘোষণায় শহরের ব্যবসায়ীরা নিজ উদ্যোগে দোকান পাট আধাবেলা বন্ধ রাখে। কাচাঁ সবজি বাজারের ব্যবসায়ীরাও নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বন্ধ রাখে বেঁচা কেনা। আন্ত: জেলায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলাচল করেনি কোন ধরনের মোটরযান। প্রচন্ড কুয়াশা উপেক্ষা করে সর্বস্তরের মানুষ নেতাকে শেষ বিদায় শ্রদ্ধা জানাতে সমবেত হয় তাঁর জানাজা ও দাফনে।
আনন্দবাজার/শাহী