ঢাকা | শনিবার
১৪ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
৩১শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বন্ধ ৬ চিনিকল, পথে ১২শ শ্রমিক

আখচাষি ও চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারীদের আন্দোলন উপেক্ষা করে পাবনা সুগার মিল বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। কল সংশ্লিষ্ট সকলের আবেদন-নিবেদনেও রক্ষা করা যায়নি ২৮ বছরের পুরনো সুগার মিলটি। এতে সংকটে পড়েছেন মিলের ১২ শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারী আর সাত হাজার আখচাষি।

বুধবার রাতে মিল বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাবনা সুগার মিলস লি: এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সাইফ উদ্দিন আহম্মেদ।

মিল বন্ধের এ সিদ্ধান্তে আজ বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) ঢাকায় চিনি শিল্পভবনে অবস্থান করে তাদের দাবি তুলে ধরবেন আখচাষি ও শ্রমিক-কর্মচারীরা।

বাংলাদেশ চিনিকল আখচাষি ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও আখচাষি কল্যাণ সমিতি পাবনা সুগার মিলস্ লি: এর সভাপতি আলহাজ্ব শাজাহান আলী বাদশা জানান, আমরা অপেক্ষায় ছিলাম চিনিকলে আখ মাড়াই শুরুর চিঠি আসছে। কিন্তু চিনিকল বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ দিয়ে বাংলাদেশ খাদ্য ও চিনি শিল্প করপোরেশন চিঠি পাঠালো। এই এক চিঠিতেই মিলের ১২শ শ্রমিক-কর্মচারী আর সাত হাজার আখচাষি পথে বসল।

পাবনা চিনিকল সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) শিল্পমন্ত্রণালয়ের ১১৬নং স্মরকের চিঠিতে বলা হয়েছে- চিনি আহরণের হার, আখের জমি, মিলের অবস্থা/দক্ষতা, লোকসান ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বিবেচনায় চলতি আখ মাড়াই মৌসুমে ১৫টি চিনিকলের মধ্যে অধিকতর বিবেচনায় ৯টি চিনিকলে উৎপাদন পরিচালনা করা হবে। অবশিষ্ট ৬টি মিলে আখ মাড়াই না করার প্রস্তাব করা হলো।

আখ মাড়াই বন্ধ করা চিনিকলগুলোর মধ্যে রয়েছে পাবনা সুগার মিল, কুষ্টিয়া সুগার মিল, পঞ্চগড় সুগার মিল, শ্যামপুর সুগার মিল, রংপুর সুগার মিল ও সেতাবগ্ঞ্জ সুগার মিল। বাংলাদেশ খাদ্য ও চিনি শিল্প করপোরেশন থেকে বুধবার (২ ডিসেম্বর) ১৯১৯নং স্মারকে এ চিঠি পাবনা সুগার মিলে পাঠানো হয়।

মিল বন্ধের চিঠি পাওয়ার পরই প্রতিবাদ ও বিক্ষোভে ফেটে পড়েন আখচাষি ও মিলের শ্রমিক কর্মচারীরা। বিক্ষুব্ধ শ্রমিক কর্মচারী ও আখচাষিরা মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করেন। কিন্তু পুলিশি বাধায় তা পণ্ড হয়ে যায়।

প্রবীণ আখচাষি আমজাদ হোসেন বলেন, দেশে বিমান, রেলওয়ে, তাঁত শিল্প কি লোকসানে নেই? সেগুলো তো বন্ধ হচ্ছে না। ওইসব সেক্টরের তুলনায় সামান্যই লোকসান চিনিকলে। তারপরও মোট চিনিকলের স্থাবর সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। সে টাকার বার্ষিক ৪ শতাংশ মুনাফা ধরলেও বছরে বাড়ছে প্রায় ১২শ কোটি টাকা। সে হিসাবে চিনিকলকে অলাভজনক বলাই যাবে না।

আখচাষি আনছার আলী ডিলু বলেন, চিনিকল বন্ধ করতে হলে অন্তত দেড় বছর আগে ঘোষণা দেয়া উচিত ছিল। তাহলে আমরা আখ চাষ করতাম না। আমাদের ভয়ানক বিপদে ফেলে দিয়েছে চিনিকল কর্তৃপক্ষ।

পাবনা সুগার মিলস শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুর রহমান জাহিদ বলেন, চিনিকল বন্ধ হলে সংশ্লিষ্ট এলাকার সর্বস্তরের জনপ্রতিনিধি জনগণের প্রশ্নের সম্মুখীন হবেন।

আনন্দবাজার/ডব্লিউ এস

সংবাদটি শেয়ার করুন