ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সৈয়দপুরে করোনা যোদ্ধা ইপিআই কর্মী করোনা আক্রান্ত

নীলফামারীর সৈয়দপুরে করোনা প্রকোপ সৃষ্টির প্রারম্ভ থেকেই সম্মুখ যোদ্ধা হিসেবে জনসেবায় নিবেদিত ব্যক্তিত্ব আবু তাহের সিদ্দিকীও অবশেষে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন। গত ৩০ নভেম্বর সোমবার রাতে তার পজিটিভ হওয়ার রেজাল্ট পাওয়া যায়। এ নিয়ে সৈয়দপুরে ১৪৬ জন ব্যাক্তি করোনা পজিটিভ সনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৩৯ জনই চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

সোমবার (৩০ নভেম্বর) দিবাগত রাতে আবু তাহের সিদ্দিকী তার ফেসবুকে প্রতিদিনের মত সৈয়দপুরের করোনা আপডেট সংক্রান্ত স্ট্যাটাসে নিজের কোভিড-১৯ আক্রান্তের কথা তুলে ধরেন “গত এপ্রিল মাস হতে অতি সাবধানতার সাথে সন্দেহজনক রোগীর নমুনা সংগ্রহ, করোনা পজিটিভ রোগীর ফলোআপ নমুনা সংগ্রহ, নীলফামারী সিভিল সার্জন অফিসে নমুনা পৌছানো, করোনা পজিটিভ রোগীর বাড়ী লকডাউন করা, মোবাইল কোর্টে অংশগ্রহণ এবং জনগণের মনে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য গ্রামের অনেক হাটবাজারসহ শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে মেগাফোন দিয়ে প্রচারণা চালিয়েছি। করোনা ভাইরাস নিয়ে প্রবন্ধ (যা স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে) ও কবিতা লিখেছি। এপ্রিল মাসে পরিবার হতে ১৮ দিন বিচ্ছিন্ন হয়ে অফিসে ছিলাম। হাম ও এএফপি রোগের নমুনা নিয়ে ৩ বার ঢাকা গিয়েছি। সাবধান থাকতে থাকতেও আজ হেরে গেলাম। মহান আল্লাহতায়ালা তাঁর সৃষ্ট করোনা ভাইরাস দিয়ে আমাকে পরীক্ষা করছেন। সৈয়দপুরবাসীর সেবা করার জন্য আমি আমার জীবনকে উৎসর্গ করেছি। আপনাদের সেবা করা হতে আল্লাহ আমাকে বঞ্চিত করলেন। আল্লাহ যা কিছু করেন বান্দার কল্যানের জন্য করেন। জানি না ভবিষ্যতে আল্লাহ আমার ভ্যাগে কি রেখেছেন। আমার জন্য ও আমার পরিবারের জন্য দোয়া করবেন যেন আল্লাহ সুস্থ রাখেন।”

তার করোনা আক্রান্তের খবর ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা জুড়ে কোভিড-১৯ নিয়ে নতুন করে তোলপাড় শুরু হয়েছে। কারণ বিগত ২ মাস যাবত সৈয়দপুরের সার্বিক চিত্র দেখে বোঝার উপায় ছিলনা যে, সৈয়দপুর করোনা আক্রান্ত এলাকার অন্তর্ভুক্ত কি না। এমনকি গত বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষনানুযায়ী করোনার দ্বিতীয় ঢেউ প্রতিরোধে মাস্ক ব্যবহারে কঠোরতার অংশ হিসেবে অভিযান চালানোর পরও সৈয়দপুরবাসীর মাঝে বিন্দু মাত্র সচেতনতা বা তৎপরতা সৃষ্টি হয়নি।

অথচ সৈয়দপুরে করোনায় এপর্যন্ত ৭ জন মারা গেছেন। সর্বশেষ গত শনিবার (২৮ নভেম্বর) একজন হোমিও চিকিৎসক রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।

আনন্দবাজার/শাহী/মনন

সংবাদটি শেয়ার করুন