ঢাকা | শনিবার
১৪ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
৩১শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হেলায় বাড়ছে মৃত্যুঝুঁকি

হেলায় বাড়ছে মৃত্যুঝুঁকি

রাজধানীতে হেলাফেলায় ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে মৃত্যুঝুঁকি। হাসপাতালের চিকিৎসকরা করোনা রোগীদের সেবায় অনেক হেলাফেলা করছেন বলে জানা গেছে। এছাড়াও সাধারণ মানুষের অসেচেতনতাও অনেকাংশে দায়ী। ফলে করোনায় সংক্রমণ ও মৃত্যু দিন দিন বেড়েই চলেছে।

পুরান ঢাকার বাসিন্দা জামিল উদ্দিন টানা জ্বর থাকায় স্ত্রীর অনুরোধে করোনা টেস্ট করতে দেন। কিন্তু নমুনার আইডিতে ভুল হওয়ায় রিপোর্ট হাতে পাননি। সপ্তাহ শেষে সকালে ঘুম ভেঙে শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে দেরি না করে ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যান তিনি।

সেখানে গিয়ে দেখা যায়, অক্সিজেনের মাত্রা নেমে গেছে ৮৩-তে। প্রথমে ৫ লিটার, ১০লিটার ও শেষে ১৫ লিটার অক্সিজেন নেওয়ার পরে অক্সিজেনের মাত্রা ৯০-এর ওপরে উঠলেও কিছুক্ষণ পর পর সেটা আবার নিচে নেমে যাচ্ছিল।

নিকটাত্মীয়দের ডেকে চিকিৎসকরা বলেন, রোগীকে আইসিইউতে নিয়ে হাইফ্লোনজেল যন্ত্রপাতিতে অক্সিজেন দিতে হবে। পরে আইসিইউতে নেয়ার পর যখন অক্সিজেনের মাত্রা ঠিক হচ্ছিল না তখন চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে দেখলেন, ফুসফুসে সংক্রমণ হয়েছে।

এরপর চিকিৎসকরা স্বজনদের ডেকে বন্ড সই নিয়ে বলেন, যেকোনো সময় রোগীর অবস্থার অবনতি হতে পারে। গত ৩ দিন ধরে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন জামিলউদ্দিন। এই ৩ দিনে সব মিলিয়ে সোয়া দুই লাখ টাকা বিল এসেছে।

জামিলের স্ত্রী আরও বলেন, আমার স্বামী করোনা সংক্রমণকে সাধারণ রোগ মনে করে ব্যাপক হেলাফেলা করায় এখন মাশুল গুণতে হচ্ছে। এমন ভুল যেন  আর কেউ না করে। আর করোনার লক্ষণ দেখা দিলেই নমুনা পরীক্ষা করে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

শুধু জামিল নন, তার মতো আরও অনেকেই হেলাফেলায় মৃত্যুঝুঁকিতে পড়ছেন বলে হাসপাতালগুলো ঘুরে দেখা গেছে। এছাড়া  মানুষের অসচেতনতা ও অবহেলার কারণে নতুন রোগী শনাক্ত ও মৃত্যুর হার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীসহ সারাদেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে গেল ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে আরও ২৯ জন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ২৩ জন পুরুষ এবং ৬ জন নারী। তারা সবাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ নিয়ে দেশে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৬০৯ জনে।

এই সময়ের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন আরও ১ হাজার ৭৮৮ জন। সেই সাথে দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৪ লাখ ৬২ হাজার ৪০৭ জনে।

আনন্দবাজার/এইচ এস কে

সংবাদটি শেয়ার করুন