ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রামে গড়ে উঠবে আইটি বিজনেস হাব: আইসিটি মন্ত্রী

‘শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার’ চট্টগ্রামবাসীর জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এক অনন্য উপহার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক মাননীয় উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ এর ব্রেইন চাইল্ড এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে একদিকে যেমন বেকারত্ব দূর হবে, একই সাথে তথ্যপ্রযুক্তিতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে একরকম উল্লম্ফন সৃষ্টি হবে। আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার থেকে বের হয়ে তরুণ উদ্যোক্তারা আইটি ইন্ডাস্ট্রিতে যেনো ব্যাপক পরিসরে কাজ করতে পারেন সে লক্ষ্যে একই জায়গায় একটি হাই-টেক পার্ক স্থাপনের কাজও শীঘ্রই শুরু হবে।’

আজ শনিবার (২৮ নভেম্বর) চট্টগ্রামে ‘শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন কালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রতিযোগিতা মোকাবেলায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আইওটি, রোবোটিকস, সাইবার সিকিউরিটিসহ উচ্চ প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করার লক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর স্থাপন করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে বর্তমানে চুয়েটে আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর স্থাপনের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। অন্যদিকে সিংগাপুর-ব্যাংকক মার্কেটের সম্প্রসারণের মাধ্যমে একটি সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে বন্দর নগরী ও দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম আইটি বিজনেস হাব হিসেবে গড়ে উঠবে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘প্রতিযোগিতার এই যুগে আমাদের তরুণদের টিকে থাকতে হলে প্রযুক্তি শিক্ষার বিকল্প নাই। সরকার এজন্যই একটি প্রযুক্তি নির্ভর জাতি গড়ে তুলতে কাজ করে চলেছে। এখন সবার হাতে হাতে মোবাইল ফোন। আমরা দৈনন্দিন অনেক কাজই এখন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে করতে পারছি। আমাদের রপ্তানি খাতেও ডিজিটাল ডিভাইস অবদান রাখতে পারে। ‘শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার’ থেকে ট্রেনিং নিয়ে এখানকার তরুণ-তরুণীরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে, অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এখন থেকে আর চাকুরির পেছনে ছুটতে হবে না, নিজেরাই উদ্যোক্তা হয়ে মানুষকে চাকুরি দিবে। ‘

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘চট্টগ্রামে এতোদিন যে গতানুগতিক বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে এসেছে আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের আইটিতে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলার মাধ্যমে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করে আইটি ইন্ডাস্ট্রিতেও এখন চট্টগ্রামবাসীর অবদান রাখার ক্ষেত্র প্রস্তুত হলো। এই আইটি ট্রেনিং সেন্টারের মাধ্যমে আইটি/আইটিইএস খাতে চট্টগ্রামের যুব সমাজের আত্ম-কর্মসংস্থানের ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম-৮ আসনের সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘চট্টগ্রামের উন্নয়নে আইসিটি বিভাগ থেকে বেশ কিছু প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, যা বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম দেশের সেরা ডিজিটাল সিটি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে বলে আমারা দৃঢ়ভাবে আশাবাদী।’

ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আসম জাশেদ খন্দকার, ‘শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন’ প্রকল্পের প্রকল্প পারিচালক (যুগ্মসচিব) মো. মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের পরিচালক এ.এম.এম শফিকুল ইসলাম, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মিজানুর রহমান, চসিকের প্রধান নির্বাহী কাজী মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক ও স্থানীয় প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা।

উল্লেখ্য, আইটি খাতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে দেশের আটটি স্থানে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন করছে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ। এরই অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম, সিলেট, রংপুর, নাটোর, কুমিল্লা, নেত্রকোণা, বরিশাল ও মাগুরায় স্থাপন করা হচ্ছে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার। বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় ৫৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের কাজ ২০১৭ সালে শুরু হয়।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে সনদ বিতরণ করা হয় এবং চটগ্রাম সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে চারটি প্রতিষ্ঠানকে স্পেস বরাদ্দ হস্তান্তর করা হয়।

আইসিটি বিভাগের অপর একটি প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে প্রায় ২০০০ বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে এবং ৫৭০ জনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে। চট্টগ্রামে যাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে তাদের মধ্য থেকে বাছাই করে ১২ জনকে ল্যাপটপ প্রদান করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলক।

আনন্দবাজার/শাহী

সংবাদটি শেয়ার করুন