বর্তমানে দেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই চলছে প্রায় ১২ হাজার হাসপাতাল-ক্লিনিক। এমনকি যথাযথ সুযোগ-সুবিধা ছাড়াই রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে এই হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনেস্টিক সেন্টারগুলো।
জানা গেছে, এর মধ্যে ২ হাজার ৯১৬টি হাসপাতাল ও ক্লিনিক লাইসেন্সের জন্য কোনো আবেদনই করেনি সেবা কেন্দ্রগুলোর কর্তপক্ষরা। এছাড়া ৯ হাজার ২৪টি হাসপাতাল-ক্লিনিকের মধ্যে কয়েকটি লাইসেন্সের জন্য আবেদন করে চিকিৎসা দেওয়া শুরু করলেও এখনও অনুমোদন পায়নি। আবার অনেক হাসপাতাল, ক্লিনিকের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, সেই অর্থে সেগুলোও অবৈধ।
গেল ১০ নভেম্বর সারা দেশে অনুমোদিত এবং অনুমোদনহীন বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের তালিকা পাঠাতে বিভাগীয় পরিচালকদের নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বিভাগীয় কার্যালয়গুলো পাঠানো তথ্য নিয়ে ইতোমধ্যে লাইসেন্সবিহীন ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের তালিকা তৈরি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম জানান, তালিকা ধরে এসকল হাসপাতাল-ক্লিনিকে অভিযান চালিয়ে সেগুলো বন্ধ করা হবে। তবে একসাথে সব স্থানে হয়ত অভিযান চালানো যাবে না। আমাদের এত জনবল নেই যে একসাথে সবগুলো বন্ধ করে দিতে পারব। আমি সিভিল সার্জনদের বলেছি, যত দ্রুত সম্ভব এসব হাসপাতাল বন্ধ করে দেওয়ার জন্য।
১৯৮২ সালের মেডিকেল অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিস অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া কোনো হাসপাতাল, ক্লিনিক বা ডায়াগনেস্টিক সেন্টার চালানোর কোন সুযোগ নেই।
অনুমোদনহীন যেসকল চিকিৎসা সেবাকেন্দ্র চিহ্নিত করা হয়েছে, তার মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছে ৩ হাজার ৫৩৫টি, ১ হাজার ৫২৩টি খুলনা বিভাগে, ১ হাজার ৯৯টি রংপুর বিভাগে, ২ হাজার ২৩২টি চট্টগ্রাম বিভাগে, ১ হাজার ৪৩৮টি রাজশাহী বিভাগে,৯৬৩টি ময়মনসিংহ বিভাগে, ৬০৩টি বরিশাল বিভাগে এবং সিলেট বিভাগে রয়েছে ৫৪৬টি ।
এবিএম খুরশীদ আলম আরও বলেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, এসকল অবৈধ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সাথে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি, ডাক্তারসহ প্রভাবশালীরা জড়িত। এ কারণে এগুলো বন্ধ করতে গেলেই সমস্যা তৈরি হয়। আপনারা এ ব্যাপারে সহায়তা করতে পারেন। যেই এসবের সাথে জড়িত থাকুক, তাদের নাম যেন প্রকাশ করে দেওয়া হয়। কেউ যদি বাধা দেয় সেটা যেন বলা হয় যে তারা বাধা দিচ্ছে।
আনন্দবাজার/এইচ এস কে