রংপুর সুগার মিল বন্ধের আশঙ্কায় বিপাকে পড়েছে শ্রমিকরা। ইতোমধ্যে লোকসানের বোঝা টানতে টানতে বন্ধ হতে যাচ্ছে গাইবান্ধার মহিমাগঞ্জের একমাত্র শিল্প প্রতিষ্ঠান সুগার মিল। প্রতিষ্ঠানটির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত লোকসানের পরিমাণ প্রায় ২০০ কোটি টাকা। সেই সাথে কোটি কোটি টাকার চিনি অবিক্রীত থাকায় বন্ধ হয়েছে শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন।
মিল কর্তৃপক্ষের দাবি, বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির যন্ত্রপাতিগুলো আধুনিকায়ন করা হলে লাভের মুখ দেখবে। মান্ধাতা আমলের মেশিন, পুরনো আমলের ডিজাইন আর প্রয়োজনীয় কাঁচামাল না পাওয়ায় বছরে দুই মাসের বেশি চালু থাকে না রংপুরের এই চিনিকল। অধিকাংশ যন্ত্রপাতি মেরামতের অযোগ্য হওয়াতে প্রতি বছর উৎপাদন কমে পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে লোকসানের পরিমাণ।
বর্তমানে বাজারে আমদানি করা চিনির মূল্য কম হওয়ায় চলতি বছর ১৫ কোটি টাকার চিনি বিক্রি হয়নি। এ অবস্থায় শ্রমিক-কর্মচারীরা গত ৫ মাস যাবত বেতন না পাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
মিলের এক শ্রমিক জানান, আমার বাবা খুব অসুস্থ, টাকার অভাবে একটা ওষুধও কিনতে পারিনি। ফলে এখন অভাবের কারণে আমরা কষ্টে দিন পার করছি। নানা অব্যবস্থাপনা আর সমস্যায় মিলটি বন্ধ হলে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে আখ চাষিরা। তাই সরকারের কাছে মিলটি রক্ষার দাবি জানিয়েছেন তারা।
কৃষকদের সহায়তা না করায় আখের অভাবে আগামীতে মিলগুলো বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন। তিনি বলেন, সুগার মিল সরকারকে বন্ধ করতে হবে না। কারণ কর্মকর্তারা টেকনিকে যে কাজ করছে, তাতে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে সকল সুগার মিল বন্ধ হবে যাবে।
উল্লেখ্য, রংপুর চিনিকলে প্রতি কেজি চিনির উৎপাদন খরচ ২০০ টাকা। কিন্তু বাজারে বিক্রি হয় ৬০ টাকায়। এতে মিলের লোকসান কেজিতে প্রায় ১৫০ টাকা।
আনন্দবাজার/এইচ এস কে