ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দক্ষিণ সুনামগঞ্জে ভাঙ্গা রাস্তায় ১৩ গ্রামের দূর্ভোগ

দক্ষিণ সুনামগঞ্জের দরগাপাশা ইউনিয়নে ছয়হারা-মৌগাঁও থেকে কাবিলাখাই হয়ে বুরুমপুর-বাংলাবাজার যাওয়ার রাস্তা ভাঙ্গা থাকায় দূর্ভোগে পড়েছেন ১০টি গ্রামের কয়েক সহস্রাধিক মানুষ। ভাঙ্গা রাস্তার ঝাঁকুনিতে নষ্ট হচ্ছে যানবাহন। রোগী চলাচলে হচ্ছে নিদারুন কষ্ট। অপরদিক, বন্যার পানিতে টুকেরবাজার এলাকা থেকে সলফ যাওয়ার রাস্তাটি ভেঙ্গে নালা তৈরি হওয়ায় সরাসরি বন্ধ আছে যান চলাচল। এ রাস্তায়ও দূর্ভোগের কমতি নেই সলফ, লালপুর ও ধরমপুর গ্রামসহ আরও কয়েকটি গ্রামের মানুষের। যান চলাচল বন্ধ থাকায় অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন এ রাস্তায় চলাচল করা প্রায় ৬০জন সিএনজি চালক। এতে তাদের পরিবারেও পড়েছে ব্যপক প্রভাব। এমন পরিস্থিতে দুটি রাস্তাই দ্রুত সংস্কারের দাবি করেছেন এলাকাবাসী ও পরিবহণ শ্রমিকরা। তবে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্র জানায়, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া রাস্তাগুলো সংস্কারের জন্য ইতোমধ্যে ডিপিবি প্রস্তুত করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। দ্রুতই এই কাজগুলো হবে।

রবিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ছয়হারা-মৌগাঁও সংলগ্ন টুকেরবাজার এলাকা থেকে বুরুমপুর-বাংলাবাজার যাওয়ার প্রায় ৬কিলোমিটার দূরত্বের রাস্তাটির প্রথমাংশের প্রায় ১ কিলোমিটার জায়গায় বন্যার পানিতে ভেঙ্গে ৫ থেকে ৭টি বড় বড় গর্তের তৈরি হয়েছে। এছাড়াও সম্পূর্ণ রাস্তার অধিকাংশ জায়গায় পানির ঢেউয়ে দু’পাশে ভাঙন ধরেছে। এর ফলে এ রাস্তায় চলাচল করা সিএনজি অটোরিকশা, লেগুনাসহ অন্যান্য যানবাহন- চলাচলে চরম দূর্ভোগে পড়েছে। এ রাস্তায় চলাচলকারী দক্ষিণ সুনামগঞ্জের কাবিলাখাই, আমরিয়া, বুরুমপুর, বাংলাবাজার, আসামপুর, হলদারকান্দি, পাইকাপন এবং জগন্নাথপুর উপজেলার কামারখাল, গলাখাই ও সিদ্ধরপাশা গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ দর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

এদিকে, দফায় দফায় বন্যায় মহাসিং নদীর পানির প্রবল ধাক্কায় ভেঙ্গে যায় টুকেরবাজার থেকে সলফ যাওয়ার রাস্তা। ফলে বন্ধ হয় যান চলাচল। এখানেও দূর্ভোগে আছেন লালপুর, সলফ ও ধরমপুর গ্রামের সহস্রাধিক চলাচলকারী। এতে দুই রাস্তার উপর জীবিকা নির্বাহ করা ৬০টিরও বেশি চালক পরিবার পড়েছেন অর্থনৈতিক সংকটে। এ সংকট থেকে উত্তরণ, যাত্রীদের নির্বিঘ্নে চলাচলের সুবিধা করে দিতে হলে দরকার রাস্তা দু’টির দ্রুত সংস্কার।

এ ব্যপারে কাবিলাখাই গ্রামের মাসুদ রানা বলেন, রাস্তাটি নিয়ে আমরা চরম দূর্ভোগে আছি। গাড়ি দিয়ে চলাচল করলেও চরম ঝাঁকুনিতে চলাচল করা যায় না। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাই।

বাঘেরকোনা, টুকেরবাজার-ছয়হারা ব্রিজের পূর্বপাড় অটোটেম্পু-অটোরিকশা ১৬৯৩ উপ-শাখার কোষাধ্যক্ষ মো. সিতু মিয়া বলেন, এ রাস্তা সংস্কার আমাদের জন্য খুবই দরকারি। ভাঙ্গা রাস্তার ঝাঁকুনিতে অনেক গাড়ি নষ্ট হচ্ছে। সলফের রাস্তা বন্ধ থাকায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন প্রায় ৬০টি চালক পরিবার। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের দাবি করছি।

দরগাপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মনির উদ্দিন বলেন, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে আমরা বিষটি জানিয়েছি। কাজও এসেছে শুনেছি। দ্রুত কাজটি হবে বলে আমি আশাবাদী।

দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাষক নূর হোসেন বলেন, রাস্তাটির বিষয়ে আমরা অবগত আছি। এলজিইডিকে আমরা বলেছি। দুই কিলোমিটার সংস্কার কাজ এসেছে। দ্রুতই আমরিয়ার রাস্তাটি সংস্কার হবে। এদিকে, সলফের রাস্তাটি পুরো ভেঙ্গে যাওয়ায় পানি কমার জন্য আরো কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে। নদী ভাঙ্গন হলে বিকল্প রাস্তার ব্যবস্থা করা হবে। আর যদি বন্যার ভাঙ্গন হয় পানি কমলেই দ্রুত সংস্কার করা হবে।

দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী মো. আল নূর তারেক বলেন, বন্যায় ভেঙ্গে যাওয়া রাস্তাগুলো সংস্কারের জন্য পিডিবি প্রস্তুত করে সশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। এ রাস্তাও আমাদের পরিকল্পনায় আছে। এখন কাজটি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে আছে। আশা করছি খুব দ্রুতই আমরা কাজটি করতে পারবো।

আনন্দবাজার/শাহী/নাহিদ

সংবাদটি শেয়ার করুন