রাজধানীতে সরকারি হিসাবে ওয়াসার আওতায় খাল আছে ২৬টি। কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে কোন অস্তিত্বই পাওয়া যায়নি এসব খালের। এছাড়া যে দু-একটা খাল আছে, দখলে দূষণে সেগুলো বর্তমানে ড্রেনে পরিণত হয়েছে। তবে বেসরকারি হিসাবে ঢাকায় খাল ছিল প্রায় ৭৪টি।
নগরবিদরা জানান, জনগণের পাশাপাশি খাল হারিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যাপক ভাবে দায়ী সরকারি বিভিন্ন সংস্থাও। তাই নির্দিষ্ট যে কোন একটি সংস্থাকে খালের দায়িত্ব দেওয়া উচিত বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
রাজধানীর অন্যতম পুরনো খাল হচ্ছে আদি বুড়িগঙ্গা। মূলত এটি বুড়িগঙ্গার একটি অংশ, যা বুড়িগঙ্গাকে সংযুক্ত করেছে ধলেশ্বরী এবং তুরাগের সাথে। তবে সেই আদি বুড়িগঙ্গা এখন রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অবহেলায় সরকারি বেসরকারি প্রাতিষ্ঠানের দখলে দূষণে হারিয়ে গেছে তথাকথিত সভ্যতার বিভিন্ন উন্নয়নে। একই অবস্থা মোহাম্মদপুরের বসিলা এলাকার কাটাসুর ও রামচন্দ্রপুর খালেরও।
শুধু এসব এলাকা নয়, রাজধানীর সকল খালের চিত্র একই। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের হিসাব অনুযায়ী ঢাকা শহরে ৭৪টি খালের অস্তিত্ব থাকলেও তার সবই বর্তমানে মৃত।
পরিবেশবিদরা বলছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সিটি করপোরেশন, সংশ্লিষ্ট সংস্থা ওয়াসা, জেলা পরিষদ কিংবা রাজউক সবার উদাসীনতাঁর জন্যই বর্তমানে খালগুলো অস্তিত্ব হারিয়েছে।
স্থপতি ইকবাল হাবিব জানান, খালের মধ্যে কালভার্ট করা, রাস্তা করা এসব রাষ্ট্রই করে। এখানে সমন্বিত একটি নকশা প্রয়োজন।
এদিকে, খালের দুরবস্থার জন্য একে অপরকে দায়ী করে নির্দিষ্ট একটি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়ার কথা বলছে ওয়াসা এবং সিটি করপোরেশন। ওয়াসা এমডি তাকসিম এ খান জানান, মাটির রাস্তা জনগণ করতে পারে, কিন্তু পিচঠালা পথ তো জনগণ করেনি। কোনও না কোনও সংস্থা করেছে।
ডিএনসিসি কমডোর এম সাইদুর রহমান জানান, যাদের অনুমতি নিয়ে এসব হচ্ছে, তাদের হয়তো তদারকির পর্যাপ্ত অভাব রয়েছে। তবে এতে রাজি নন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী। এমনকি খাল উদ্ধারে প্রয়োজনে জমি অধিগ্রহণ করা হবে বলেও জানান তারা।
আনন্দবাজার/এইচ এস কে