গাজীপুরের শ্রীপুরে আওয়ামী রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নেয়া ত্যাগী কর্মী হিসেবে পরিচিত পৌর নির্বাচনে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী মোহাম্মদ মাসুদ আলম ভাঙ্গী পৌরবাসীর সেবা করতে চায়। প্রয়াত পিতা সিরাজুল ইসলাম ভাঙ্গীর ন্যায় তিনিও আওয়ামী রাজনীতি ও শ্রীপুরের মানুষের প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ।
পরিবার থেকে রাজনীতিতে হাতে খড়ি মাসুদ আলম ভাঙ্গী স্কুলে পড়ার সময় ১৯৯৩ সালে শ্রীপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক, ২০০১-২০০২ সালে ভাওয়াল বদরে আলম সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের নির্বাচীত ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক, ২০০৬ সালে গাজীপুর জেলা ছাত্রলীগের দুর্যোগ ও ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক ও ২০১৯ সালে শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হিসেবে তিনি রাজনীতিতে নিজেকে সক্রিয় রেখেছেন।
সাবেক মেধাবী ছাত্র নেতা মাসুদ আলম ভাঙ্গী রাজনৈতিক আন্দোলন সংগ্রাম ও সামাজিক সেবামূলক কর্মকান্ডের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নিজেকে পৌর এলাকার মানুষের সেবায় নিয়োজিত রাখতে চান। এছাড়াও পারিবারিক ও সামাজিক কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী মাসুদ আলম ভাঙ্গী। আন্দোলন সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন তিনি। ২০০১ সালে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় তার বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
তার প্রয়াত পিতা মোঃ সিরাজুল ইসলাম ভাঙ্গী ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠনের সাথে সরাসরি জড়িত ছিলেন। তিনি ১৯৭৭ সালে শ্রীপুর ইউনিয়ন (বর্তমানে পৌরসভা) সাধারণ সম্পাদক, ১৯৮০ সালে থানা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, ১৯৮৪ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত শ্রীপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি এবং ১৯৭৮ সাল থেকে দীর্ঘ সময় জেলা আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। সিরাজ ভাঙ্গী সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাংক ও বিআরডিবি’র সহ-সভাপতি ছিলেন। কেওয়া খাদিজাতুল কুবরা(রা:) মহিলা ফাজিল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি ছিলেন। ২০০১ সালে বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার খবরে স্টোক করে বারডেম হাসপাতালে মারা যান সিরাজুল ইসলাম ভাঙ্গী।
শিক্ষাবিস্তার, অপরাধ দমন ও আইনশৃঙ্খলার উন্নয়ন এবং স্বেচ্ছাসেবী বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে ইতিবাচক অনেক কাজের সাথে দীর্ঘদিন ধরে মাসুদ আলম ভাঙ্গী জড়িত। তিনি শ্রীপুর পৌর এলাকার কেওয়া খাদিজাতুল কুবরা (রা:) মহিলা ফাজিল মাদ্রাসার জমিদাতা ও সহ-সভাপতি। কেওয়া ভাঙ্গীবাড়ি কমিউনিটি ক্লিনিক ও ভাঙ্গীবাড়ি বায়তুল ফালাক জামে মসজিদের জমিদাতা তিনি। মাসুদ আলম ভাঙ্গী শ্রীপুর উপজেলা কমিউনিটি পুলিশ(বিট পুলিশিং) এর সাধারণ সম্পাদক। সুবিধাবি ত মানুষদের পাশে দাঁড়াতে সর্বাদা সচেষ্ট তিনি।
মোঃ মাসুদ আলম ভাঙ্গী বলেন, শ্রীপুর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেলে এবং নির্বাচীত হলে পৌর এলাকার উন্নয়ন বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণা শুরুর আগেই উন্নয়ন পরিকল্পনা ও নাগরিকদের সেবা বিষয়ে ভোটারদের কাছে ইশতেহার তুলে ধরবেন বলে জানান। তিনি বলেন, শ্রীপুর পৌরসভাকে আধুনিক ও বাসযোগ্য নগরী গড়তে অঙ্গীকারাবদ্ধ। নাগরিক সেবা বৃদ্ধিসহ উন্নয়নমূলক কাজে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়ার অঙ্গীকার এই নেতার। পৗরসভার উন্নয়ন পরিকল্পনা সম্বলিত ইশতেহারে থাকবে আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং সরকারের সহায়তায় জাতিয়মানের স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজ, মেডিক্যাল কলেজ ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন। গরিব ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা চালু করা।
তিনি আরো বলেন, নারী নির্যাতন রোধ ও পৌরবাসীর নিরাপত্তার ব্যাপারে তিনি ইশতেহারে অন্তভূক্ত করেছেন, সড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা স্থাপন, ওয়ার্ডভিত্তিক বিট পুলিশিং (কমিউনিটি পুলিশের) মাধ্যমে পৌরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে ওয়ার্ডভিত্তিক আধুনিক গণগ্রন্থাগার স্থাপনসহ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং ইভটিজিং রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
নির্বাচীত হলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুরত্ব দিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। সড়ক মহাসড়কের পাশে ময়লা ফেলে জনদুর্ভোগ না বাড়িয়ে নির্দিষ্ট স্থানে ডাম্পিং করা হবে। পরিচ্ছন্ন নগরী গড়তে বর্জ্য সংগ্রহ করে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে রিসাইক্লিংয়ের উদ্যোগের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পাবে।
পৌরবাসীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তিনি ওয়ার্ডভিত্তিক মেডিক্যাল সেন্টার স্থাপন, ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্পের ব্যবস্থা ও রোগীকে জরুরী এ্যাম্বুলেন্স সেবা নিশ্চিত করার অঙ্গীকারের বিষয়টি ইশতেহারে গুরুত্ব পাবে। মহানগরের বাজারগুলোতে ভেজালমুক্ত খাদ্য নিশ্চিত করা। সুপেয় পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।
নগরের পয়ো:নিষ্কাশনের জন্য ড্রেন নির্মাণের বিষয়ে গুরুত্ব দিবেন তিনি। জলাবদ্ধতা নিরসনে পর্যাপ্ত ড্রেনেজের ব্যবস্থা নিশ্চিত করবেন বলেও এই নেতা এ প্রতিবেদক কে জানান। নগরীর প্রত্যেকটি সড়কে সড়কবাতি নিশ্চিত করবেন।
অর্থনৈতিক জোন ও শিল্পপার্ক স্থাপন, পৌর এলাকায় অর্থনৈতিক জোন ও শিল্পপার্ক স্থাপন করার মাধ্যমে অন্তত এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেছেন মাসুদ আলম ভাঙ্গী।
যোগাযোগের ক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ উন্নয়ন পরিকল্পনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি উল্লেখ করেন, পৌর এলাকার চারদিকে প্রশস্ত রাস্তা নির্মাণ করা হবে। যানজট নিরসনে ওয়ার্ডভিত্তিক রাস্তা প্রশস্ত এবং প্রয়োজন অনুসারে নতুন রাস্তা নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। শ্রীপুর থেকে রাজেন্দ্রপুর পর্যন্ত প্রয়োজন অনুযায়ী ইউলোপ নির্মাণ করা। পৌরশহরের শাখা রাস্তাাগুলোতে ফুটপাত নির্মাণ এবং বিশেষ পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে।
সামাজিক নিরাপত্তায় পৌরসভার পক্ষ থেকে প্রতি ওয়ার্ডে মসজিদ, মন্দির ও অন্যান্য উপাসনালয়, কবরস্থান, খেলার মাঠ, পার্কিং এবং কমিউনিটি সেন্টার স্থাপন করার প্রতিও তিনি জোর দেবেন বলে জানান।
এছাড়া, পৌরসভার সকল প্রকার সেবা ডিজিটালাইজেশন এবং ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করা, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও হকারদের জন্য সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা, শতভাগ আবাসিক এবং শিল্প স্থাপনায় বিদ্যুৎ ও গ্যাসের ব্যবস্থা করা, রাস্তার পাশে এবং ফাঁকা জায়গায় বৃক্ষরোপনের মাধ্যমে সৌন্দর্য্য বর্ধণ ও সবুজায়ন করার বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।
মাসুদ আলম ভাঙ্গী বি এস সি (অনার্স), এম এস সি সম্পূর্ণ করে রাজনীতির পাশাপাশি ব্যবসা শুরু করেন। তিনি ফেয়ার প্যাক প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি শ্রীপুর পৌর এলাকার ভোটার, আওয়ামীলীগ দলীয় নেতা-কর্মী ও সকল শ্রেনী পেশার মানুষের সহায়তা কামনা করেন।
আনন্দবাজার/শাহী/সবুজ