ঢাকা | সোমবার
২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাতে বিষাক্ত পোকা, দিনে সন্তান হারানোর ভয়!

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার রাঙ্গাবালী সদর ইউনিয়নের বিচ্ছিন্ন দ্বীপের নাম চরকাশেম। বঙ্গোপসাগরের মোহনায় এ দ্বীপের জন্ম। প্রায় তিন হাজার একর আয়তনের দ্বীপটিতে দুই শতাধিক পরিবারের বসবাস। এখানে নেই কোন ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র। আকাশে মেঘ দেখলে আতঙ্কে থাকেন এ দ্বীপের বাসিন্দারা।

নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানি বৃদ্ধি পেলে ভেসে যায় ঘরের হাড়ি পাতিল। ভেসে যাওয়ার ঘটনা অহরহ। বর্ষা মৌসুমে প্রায়ই তারা পানিবন্ধি হয়ে পড়ে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ আর একটি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র না থাকায় বছরের পর বছর ধরে এভাবেই বসবাস করে আসছে বাসিন্দারা। রাতে বিষাক্ত পোকার ভয়, দিনে পানিতে সন্তান হারানোর ভয়। এভাবেই কাটছে তাদের জীবন।

জানা গেছে, ১৯৪০ সালের দিকে বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেষে প্রায় তিন হাজার একর জমি নিয়ে এ দ্বীপের উত্থান ঘটে। পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর, কোণে বুড়াগৌড়াঙ্গ নদী আর দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর দ্বারা বেষ্টিত চরকাসেম দ্বীপ রাঙ্গাবালী ইউনিয়নের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অবস্থান। গত ৩৫-৪০ বছরে ভূমিহীনসহ নানা শ্রেণী পেশার প্রায় ২ শতাধিক পরিবার এখানে আশ্রয়স্থল গড়ে তোলে। সদর ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় একটি ছোট  খেয়া  নৌকার ওপর নির্ভর করতে হয় এখানকার মানুষদের। বর্ষার  মৌসুমে নদী উত্তাল থাকলে এক সপ্তাহের বেশি সময় পার হয়ে গেলেও সদর ইউনিয়নে আসার সুযোগ থাকে না দ্বীপ বাসিন্দাদের।

শুধু চরকাশেম নয়, উপজেলার চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের চরলতা, ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের কাউখালী, চরইমারশন, চরনজির, চর তোজাম্মেল, রাঙ্গাবালী ইউনিয়ন চরকানকুনি, চরকলাগাছিয়াও ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নেই।  জানা গেছে, চরলতায় সাড়ে ৭শত লোক এর মধ্যে ভোটার সংখ্যা রয়েছে ২০৩ জন, চরইমারশনে মোট জনসংখ্যা রয়েছে প্রায় সাড়ে ৫শত এদের মধ্যে ভোটার সংখ্যা ১৯৬ জন, কাউখালীচরে  মোট জনসংখ্যা ৬ শত মোট ভোটার সংখ্যা ২০৮ জন ও চরনজির জনসংখ্যা ৮শত মোট ভোটার সংখ্যা ২১০ ও চরকানকুনিতে মোট জনসংখ্যা প্রায় ১ হাজার এদের মধ্যে  ভোটার সংখ্যা ৫৫০ জন।

চর-কাশেম এর বাসিন্দারা জানান, ঘূর্নিঝড়ের সময় আমাদের কোথায় যাওয়ার জায়গা নাই । সরকার আমাদের কষ্ট লাঘবের জন্য এখানে একটা আশ্রয় কেন্দ্র ও বেড়িবাধঁ দিলে আমাদের ভাল হয়।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো.হুমায়ন কবির বলেন, ওইসব চরাঞ্চলে কোন  আশ্রয় কেন্দ্র নেই। ওই সমস্ত এলাকার পরিবারদের ঘূর্নিঝড়ের সময় আমাদের সরিয়ে আনতে কষ্ট হয়। আমরা ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রের জন্য দ্রুত প্রস্তাব পাঠাবো।

আনন্দবাজার/শাহী/মাহমুদ

সংবাদটি শেয়ার করুন