রবিবার, ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশে শিশু পুষ্টির জন্য হুমকি জলবায়ু পরিবর্তন

বিশ্বব্যাপী বৃদ্ধি পাচ্ছে তাপমাত্রা, বদলে যাচ্ছে পরিবেশ। জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের মত দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলো সব চাইতে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সম্পর্কিত স্বাস্থ্য সমস্যা এই দেশগুলোর জন্য বড় চিন্তার বিষয়।

বাংলাদেশে শিশুদের মধ্যে ৪৫ শতাংশেরও বেশি পুষ্টিহীন বা অতিরিক্ত ওজন ও গুরুতর স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির মুখে রয়েছে। আর শিশু পুষ্টির জন্য জলবায়ু পরিবর্তন একটি বড় হুমকি। এমনটাই উঠে এসেছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ-এর নতুন এক প্রতিবেদনে।

বাংলাদেশের শিশুদের ভবিষ্যৎ মেঘাচ্ছন্ন করে দিচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বাংলাদেশের সমতল প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য, ঘনবসতি ও দুর্বল অবকাঠামোর কারণে দেশটি শক্তিশালী ও অননুমেয় শক্তিগুলোর কাছে বিশেষভাবে অরক্ষিত হয়ে পড়ছে। এই পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলছে জলবায়ু পরিবর্তন। দেশটির উত্তরের বন্যা ও খরা-প্রবণ নিম্নাঞ্চল থেকে শুরু করে বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী ঝড় ও ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ অঞ্চল পর্যন্ত এই হুমকি অনুভূত হয়।

ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি এডুয়ার্ড বেগবেদার বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যখন গ্রামাঞ্চলের পরিবারগুলো তাদের বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়, তখন শিশুরা কার্যকরভাবে তাদের শৈশব হারায়। শহরে তারা বিপদ ও বঞ্চনার সম্মুখীন হওয়ার পাশাপাশি শোষণ ও নিগ্রহের শিকার হওয়ার ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও বাইরে কাজে যেতে চাপের মুখে পড়ে।”

জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত বিধ্বংসী বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ও অন্যান্য পরিবেশগত বিপর্যয়গুলো বাংলাদেশে ১ কোটি ৯০ লাখের বেশি শিশুর জীবন ও ভবিষ্যতকে হুমকির মুখে ফেলছে।

আরও পড়ুনঃ  তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা ৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস

চলতি বছরের মার্চের শুরুতে বাংলাদেশ সফর করে যাওয়া ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েত্তা ফোর বলেন, “বাংলাদেশের দরিদ্রতম কমিউনিটিগুলো পরিবেশগত যে হুমকির মোকাবেলা করছে তা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন, যার কারণে তারা তাদের সন্তানদের যথাযথভাবে রাখতে, খাওয়াতে এবং স্বাস্থ্যবান ও শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে সক্ষম হচ্ছে না। বাংলাদেশে এবং বিশ্ব জুড়ে শিশুদের বাঁচিয়ে রাখা এবং তাদের উন্নয়নে দেশগুলোর অনেক অর্জন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ম্লান হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’’

প্রতিবেদনে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শিশুদের সুরক্ষা প্রদানে বেশ কিছু উদ্যোগ বাস্তবায়নে সরকারকে সহযোগিতা দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও অন্য অংশীদারদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

ইতোমধ্যে ইউনিসেফ ও অন্য অংশীদারদের সহযোগিতায় চালু করা একটি প্রযুক্তি যা ম্যানেজড অ্যাকুইফার রিচার্জ’ নামে পরিচিত। এটি উপকূলীয় কমিউনিটিগুলোকে তাদের গুরুত্বপূর্ণ খাবার পানির সরবরাহে সমুদ্রের লবণাক্ত পানির অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সহায়তা করবে।

 

আনন্দবাজার/বাবলু

সংবাদটি শেয়ার করুন