ঢাকা | সোমবার
১৬ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
২রা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সোশ্যাল মিডিয়ায় ধর্ষণের হুমকি দিলে যা করণীয়

সোশ্যাল মিডিয়ায় ও অনলাইনে নারীদের প্রায়ই ধর্ষণের হুমকি দিতে দেখা যায় নানা বয়সের পুরুষদের। আক্রমণাত্মক বা অপমানজনক মন্তব্য করা বা কুরুচিপূর্ণ প্রস্তাব দেয়ার নজিরও কম নয়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এসব ঘটনার ভুক্তভোগীরা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন না। বাংলাদেশের আইনে এসব ক্ষেত্রে অনেক পদক্ষেপই নেওয়া যায়।

অনলাইনে এমন কিছুর শিকার হলে তথ্য-প্রমাণসহ সাইবার ক্রাইম ইউনিটে অভিযোগ করার পরামর্শ দিয়ে আইনজীবী মিতি সানজানা বলেন, বাংলাদেশের আইনে কাউকে কোনো হুমকি দেয়া শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এছাড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে যে, কোনো ব্যক্তি যদি ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে ইচ্ছাকৃত বা অজ্ঞাতসারে অন্য ব্যক্তির জন্য আক্রমণাত্মক বা ভীতি প্রদর্শক কোনো তথ্য প্রকাশ করেন, অথবা এমন কোনো তথ্য প্রকাশ করেন যা অন্য ব্যক্তিকে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ করতে পারে এবং মিথ্যা জানা সত্বেও অন্যদেরকে অপমান, অপদস্থ, বিরক্ত বা হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে কোনো মন্তব্য করা হলে তার কারাদণ্ড ও জরিমানা করার বিধান রয়েছে।

তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী এরকম ক্ষেত্রে তিন বছরের কারাদণ্ড ও তিন লাখ টাকা শাস্তির বিধান রয়েছে। এছাড়া এই ধরনের অপরাধের পুনরাবৃত্তি হলে, অর্থাৎ অনলাইনে এই ধরনের কন্টেন্ট ছড়িয়ে দিতে থাকলে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও দশ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় শাস্তির বিধান রয়েছে। এরকম ক্ষেত্রে নিকটস্থ থানায় সরাসরি অভিযোগ করে, সাইবার ইউনিটে মেইল করে এবং কাউন্টার টেররিজম বিভাগের ‘হ্যালো সিটি’ অ্যাপের মাধ্যমেও অভিযোগ করা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, ই-মেইল এবং অ্যাপে অভিযোগ করার ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী নিজের পরিচয় গোপন রেখেও অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। যত দ্রুত সম্ভব অভিযোগ করা উচিত এবং অভিযোগের পক্ষে কিছু তথ্য প্রমাণ জোগাড় করে রাখা ভালো। স্ক্রিনশট, লিঙ্ক, অডিও-ভিডিও ফাইল বা সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রসহ অভিযোগ করা প্রয়োজন। আর স্ক্রিনশটের ক্ষেত্রে আমরা পরামর্শ দেই যেন অ্যাড্রেসবারের ওপর যে ইউআরএল দেখা যায়, সেটিও যেন স্ক্রিনশটে থাকে।

ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে ধর্ষণে উস্কানি দেয়ার অভিযোগে গত শনিবার ঢাকার খিলক্ষেত থেকে একজনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। র‍্যাব জানিয়েছে, ওই যুবক ছাড়াও আরও কয়েকটি ফেসবুক আইডি তাদের নজরদারিতে আছে যেখান থেকে ধর্ষণের হুমকি বা ধর্ষণকে সমর্থন করে পোস্ট বা কমেন্ট করা হয়েছে।

র‍্যাবের কর্মকর্তা মুশফিকুর রহমান জানান, র‍্যাবের পক্ষ থেকে অনলাইন মনিটরিংয়ের জন্য একটি সেল তৈরি করা হয়েছে। সেখানে তারা দেখতে পেয়েছেন, ফেসবুকে বিভিন্ন সময় নারী মডেল, সেলিব্রেটি ও লেখকের পোস্টে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়।বর্তমানে যারা ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন করছেন তাদের নিয়েও বেশ কুরুচিপূর্ণ পোস্ট করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার/ডব্লিউ এস

সংবাদটি শেয়ার করুন