ঢাকা | সোমবার
১১ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
২৬শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে উত্তেজনা, সংঘর্ষে নিহত ৪

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। রোহিঙ্গাদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, ইয়াবা ও ক্যাম্প ভিত্তিক আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রতিনিয়ত সংঘর্ষের কারণে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে সাধারণ রোহিঙ্গা ও স্থানীয় বাংলাদেশিরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। গত সপ্তাহজুড়ে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চলমান সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছে ৭জন রোহিঙ্গা।

এর পূর্বে গত ৪ ও ৫ অক্টোবর দুইপক্ষের সংঘর্ষে ৩ জন রোহিঙ্গা নিহত হন। এ ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে অভিযান চালিয়ে ৯ রোহিঙ্গা ডাকাতকে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক করা হয়। স

কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং লম্বাশিয়া ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপের সংঘর্ষে ৪ রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সংঘর্ষে প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে এ সংঘর্ষের শুরু হয় বলে  জানান কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম।
তিনি জানান, নিহতদের পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। হামলা নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে আনসারের এক সদস্যও আহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

রফিকুল ইসলাম জানান, উখিয়ার কুতুপালং লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র নতুন ও পুরাতন রোহিঙ্গাদের মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে সংঘর্ষের ঘটনায় ৪ জন রোহিঙ্গার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজন গুলিবিদ্ধ ও একজনকে গলাকাটা অবস্থায় পাওয়া গেছে। উক্ত ক্যাম্পে বর্তমানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন আছে। সংঘর্ষ থেমে গেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্প সূত্র জানায়, কুতুপালংয়ের অদূরবর্তী গভীর জঙ্গলে লম্বাশিয়া ক্যাম্পের সশস্ত্র মুন্না গ্রুপের সেকেন্ড ইন কমান্ড গিয়াস উদ্দিকে তার প্রতিপক্ষ বাহিনী পিটিয়ে হত্যা করেছে। এসময় ছেলেকে বাচাঁতে গিয়ে গিয়াস উদ্দিনের মা বাবাও ঘটনাস্থলে মারা যান। এদিকে উত্তেজিত রোহিঙ্গারা মুন্না গ্রুপের আরেক সদস্যকে জবাই করে হত্যা করেছে।

লম্বাশিয়া ক্যাম্পের আজিজুল হক, ছৈয়দ নুর ও শামসুজ্জোহা নামের তিন রোহিঙ্গা জানিয়েছেন, গিয়াস উদ্দিন ও তার বাবা-মার মৃত্যুও খবর ছড়িয়ে পড়ার পর লম্বাশিয়া ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। গ্রেপ্তার আতঙ্কে অনেকেই পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছে বলেও দাবি করেন তারা।

গত ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়ে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের পাহাড়ি জমিতে ৩৪টি ক্যাম্পে আশ্রয় নেয় ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। আশ্রয় নেওয়ার পর এক বছর নিরবে রোহিঙ্গারা সময় অতিবাহিত করলেও যত দিন যাচ্ছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে অপরাধ বাড়ছে।

আনন্দবাজার/এফআইবি

সংবাদটি শেয়ার করুন