নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে বিবস্ত্রকরে গৃহবধু নির্যাতনে জড়িত অপরাধীদের গ্রেফতার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে গণ অবস্থান করেছে ‘যৌন নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীজোট’র ব্যানারে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থী, লেখক ও নারী অধিকারকর্মী।
সোমবার বিকাল সাড়ে চারটা থেকে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে জড়ো হয়ে এ গণ অবস্থান কর্মসূচী পালন করেন তারা।
গণ অবস্থান থেকে যৌন নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীজোটের আহবায়ক মাহমুদুল হাসান শিভলি চারটি দাবি তুলে ধরেন। দাবি গুলো হলো, ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের আইনি বিধান নিশ্চিত করা, ৯০দিনের মধ্যে নারী নির্যাতন বা ধর্ষণ মামলার রায় প্রদান, নারী ধর্ষণ হওয়ার পর আদালতের জেরা রোধ করা এবং প্রতিটি থানাতে একটি নারী সেল গঠন করা। এসময় তিনি আগামী রবিবার সকল এগারোটায় শাহবাগ থেকে আইনমন্ত্রণালয় বরাবর গণপদযাত্রার কর্মসূচী ঘোষণা করেন।
এসময় তারা ‘আমার মেয়েটা ছোট ওরে অন্তত ছেড়ে দেন’ , ‘প্রতিবাদের মিছিল আর কতো দীর্ঘ হবে’ , ‘ধর্ষকের এ উল্লাস মঞ্চ আমার দেশ না’ , ‘স্যার ছেড়ে দেন আমি কাউকে বলবো না ‘ সহ ধর্ষণবিরোধী বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড বহন করেন।
গণ অবস্থান কর্মসূচীতে মালেশিয়ার পুলিশ কতৃক নির্যাতিত রায়হান কবির বলেন, আমার লজ্জা লাগছে যে বিদেশের মাটিতে আমাকে প্রতিবাদ করতে হয়েছে দেশের মানুষদের জন্য আর আজ আমাকে দেশের মাটিতেও বিচার দাবি করে ব্যানার হাতে দাঁড়াতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জার আমার আর কিছু নেই।
বৈশাখি টেলিভিশনের এক সংবাদকর্মী বলেন, আমি এখানে আমার অস্তিত্ব খুঁজতে এসেছি। প্রতিনিয়ত আমার চারপাশের ঘটনা আমাকে বুঝাচ্ছে আমার অস্তিত্ব কী ৷ আমি মানুষ হয়ে বাঁচতে চাই, নারী হয়ে নয়৷
বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের আজীবন সদস্য ড. উম্মে হুমায়রা কানেতা বলেন, আমরা শাহবাগ প্রেসক্লাবে দাঁড়িয়ে যতই চিৎকার করি না কেন উচ্চপর্যায়ের সদিচ্ছা না থাকলে কখনোই এসব বন্ধ করা সম্ভব না। এসময় তিনি মহিলাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের যাদের মেয়ে আছে আপনারা আপনাদের মেয়েদের সেল্প ডিফেন্স শিখাবেন যেন সে নিজেই নিজেকে রক্ষা করতে পারে। তার জন্য যেন কাউকে এখানে দাঁড়িয়ে থাকতে না হয়।
শেরে বাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়ের প্রভাষক ফাহমিদা বিনতে হামিদ বলেন, সমানে নারীদের যে অবমাননা করা সেটি থেকে উত্তরণের একমাত্র রাস্তা পারিবারিক শিক্ষা। অনেক অভিভাবকরাই আসলে তাদের সন্তানরা কি করছে, ইন্টারনেটে কি দেখছে সেটা খেয়াল করেন না। কিন্তু এটা অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে। আর এখন যে বিচারহীনতা সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে সেটি থেকেও আমাদের উত্তরণ ঘটাতে হবে৷
আনন্দবাজার/শাহী/মনির