বাংলাদেশের গ্রামীন অঞ্চলে নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন সেবার প্রাপ্তি ও উন্নতিকল্পে এবং স্বাস্থ্যসম্মত অভ্যাস গড়ে তুলতে ২০০ মিলিয়ন ডলার অনুমোদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। আজ শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এই অনুমোদন দিয়েছে সংস্থাটি।
‘বাংলাদেশ রুরাল ওয়াটার, স্যানিটেশন অ্যান্ড হাইজিন ফর হিউম্যান ক্যাপিটাল ডেভেলপমেন্ট প্রোজেক্ট’-এ খরচ করা হবে। এ প্রকল্প গ্রামীণ অঞ্চলে প্রায় ৬ লাখ মানুষকে নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানি পেতে সহায্য করবে। তাছাড়া এ প্রকল্প ৩.৬ মিলিয়নেরও বেশি গ্রামীণ মানুষকে উন্নত স্যানিটেশন সেবা সরবরাহ করবে।
ময়মনসিংহ, রংপুর, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ৭৮টি উপজেলার আওতাধীন এ প্রকল্প বাড়িতে ও পাবলিক প্লেসে পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যকর সুবিধাগুলোর আরও ভালো প্রাপ্তি নিশ্চিত ও মানুষকে যথাযথভাবে হাতধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে উদ্বুদ্ধ করার মধ্য দিয়ে রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করবে। একই সাথে করোনা মহামারিসহ সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা করবে।
বাজার, বাস স্টেশন ও কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর মতো জনাকীর্ণ পাবলিক স্পেসগুলোতে প্রকল্পের আওতায় ২ হাজার ৫১৪টি হাতধোয়ার স্টেশন করবে। যাতে পানি, নিষ্কাশন ও স্যানিটেশন সুবিধার পাশাপাশি ওভারহেড ট্যাঙ্ক ও সাবানের ব্যবস্থা থাকবে।
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর (বাংলাদেশ ও ভুটান) মের্সি টেম্বন জানান, সবার জন্য প্রয়োজনীয় পানির প্রাপ্তি নিশ্চিত করা ও খোলাস্থানে মলত্যাগ বন্ধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। কিন্তু পানি ও স্যানিটেশনের মান এবং নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ও জীবনমান উন্নয়নের মধ্যে যোগসূত্র একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।
তিনি আরও জানান, এই প্রকল্পটি নিরাপদ পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন সেবা প্রদান করবে, যা ডায়রিয়াজনিত রোগ হ্রাস করবে; পুষ্টি ও স্বাস্থ্য উন্নত করবে। বিশেষত দুর্বল জনগোষ্ঠীকে সবচেয়ে বেশি উপকৃত করবে। এটি দেশকে দারিদ্র্য হ্রাস ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করতে সহায্য করবে।
বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ পানি বিশেষজ্ঞ ও টিম লিডার রোকেয়া আহমেদ জানান, জলবায়ুগত পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও সবচেয়ে বেশি সংবেদনশীল দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। চরম আবহাওয়া ও জলবায়ুগত পরিবর্তনের প্রভাব পানীয়জলের গুণগতমান এবং সহজলভ্যতা কমায়, যা স্বাস্থ্যকর ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করে। তাই এ প্রকল্প জলবায়ুর প্রভাবসহায়ক বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন সুবিধা তৈরি করবে। একই সাথে পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনার উন্নতি করে ভূমি ও ভূগর্ভস্থ পানির দূষণ হ্রাস করবে।
প্রকল্পের আওতায় স্যানিটারি ন্যাপকিন বিক্রির জন্য প্রায় দেড়শ নারী উদ্যোক্তাকে ক্ষুদ্রঋণ সরবরাহ করা হবে। তাছাড়া এটি কমিউনিটি পর্যায়ে পানি ব্যবস্থাপনা কমিটিগুলোতে নারীদের প্রতিনিধিত্ব ও নেতৃত্ব উৎসাহিত করবে।
আনন্দবাজার/এফআইবি