মামলা জটিলতায় আটকে আছে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি পৌরসভার নির্বাচন। ইত্যিমধ্যে পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরদের দায়িত্ব পালনের মেয়াদ চার বছর অতিক্রান্ত হলেও পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। সংশ্লিষ্টটের দাবী, সীমানা সংক্রন্ত মামলা থাকার কারনে নির্বাচন হচ্ছে না। তবে কোন মামলায় নির্বাচন আটকে আছে তা সুনিদিষ্ট করে কেউ বলতে পারেননি। অভিযোগ রয়েছে নিজেদের ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করে রাখতে ভিত্তিহীন অভিযোগে আদালতে মামলা দিয়ে নির্বাচন কমিশনে আইনি নোটিশ পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
জানা যায়, বিগত ২০১১ সালের ১২ই জানুয়ারী সর্বশেষ পৌর নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মেয়র হিসাবে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব মেয়র নির্বাচিত হন। নির্বাচনের পর পৌর সভার প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয় ২০১১ সালের ৬ই মার্চ। সেই হিসাবে ২০১৬ সালের ৬ই মার্চ পৌর পরিষদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়। কিন্তুু মেয়াদ উত্তীর্ণের এক বছর পূর্বে ২০১৫ সালে পাঁচবিবি উপজেলার বালিঘাটা ইউনিয়নের গণেশপুর, পাটাবুকা, মহব্বতপুর, খাসবাগুড়ী ও করট্টি এই ৫টি মৌজার আংশিক অংশ নিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ে আবেদন করলে মন্ত্রনালয় ২০১৬ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর ঐ ইউনিয়নের ৫টি মৌজার আংশিক অংশকে পৌরসভায় যুক্ত করার ঘোষনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেন। এমতবস্থায় ২০১৭ সালের ২৯ অক্টোবর তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোকাম্মেল হক পাঁচবিবি পৌরসভায় সীমানা সংক্রান্ত কোন মামলা না থাকায় নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোন বাধা নেই মর্মে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ে পত্র দিয়ে জানিয়ে দেয়।
কিন্তু ২০১৮ সালে বালীঘাটা ইউনিয়ন পরিষদ রিট মামলা দায়ের করেন এবং খাসবাগুড়ী গ্রামের বেলাল ফকিরসহ ৯জন জয়পুরহাটের জেলা জজ আদালতের পাঁচবিবি আমলি আদালতে পৌরসভার সম্প্রসারিত সীমানা স্থগিতের জন্য মামলা করেন। পরবর্তীতে জনৈক শারাফাত হাসানের দায়েরকৃত মামলা আদালত ২০১৯ সালের ২৯ অক্টোবর খারিজ করে দেন। অপরদিকে বালিঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান চৌধুরী বিপ্লব একই বছরের ১১ নভেম্বর এবং বেলাল ফকির ৪ই মার্চ তাদের দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার করে নেন। ২০১৮ সালে পাঁচবিবি পৌরসভার সীমানার গেজেট স্থগিতের ৩টি মামলা নিস্পত্তি হলেও পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য কোন উদ্যোগ নেই জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কমিশনের।
এবিষয়ে পাঁচবিবি পৌরসভার বর্তমান মেয়র হাবিবুর রহমান হাবিব জানান, আদালতে মামলা থাকায় নির্বাচন আটকে আছে। তবে কোন মামলায় নির্বাচন আটকে আছে তা সুনিদিষ্ট করে বলতে পারেননি তিনি। বালীঘাটা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান চৌধুরী বিপ্লব বলেন, পৌরসভার সীমানা সম্প্রসারণে আদালতের স্থগিতাদেশ আছে। তবে কোন মামলা স্থগিতাদেশ তা তিনিও বলতে পারেননি।
পাঁচবিবি উপজেলা নির্বাচন অফিসার শহিদুল ইসলাম বলেন, পাঁচবিবি পৌরসভা থেকে জানানো হয়েছে সীমানা সম্প্রসারণের গেজেট স্থগিতের মামলা আছে, তবে কোন মামলায় স্থগিত আছে তা পৌরসভা লিখিত ভাবে জানাতে পারেন নি। তাই আমিও জানিনা কি কারণে নির্বাচন স্থগিত আছে।
পাঁচবিবি নাগরিক কমিটির আহবায়ক মাহাবুর রহমান সরকার বলেন, ক্ষমতায় দীঘদিন থাকার চিন্তায় বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে নির্বাচন আটকে রাখা হয়েছে। তবে পৌরসভার সচেতন মহুল কথিত মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার সহ দ্রæত নির্বাচনের আশা ব্যক্ত করেছেন।
আনন্দবাজার/শাহী/বাবুল