ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ককে চারলেনে উন্নীত করলেও নতুন করে দুর্ভোগ তৈরী হয়েছে মহাসড়কের পাশে বর্জ্যরে ভাগাড় নিয়ে। মহাসড়কের গাজীপুরের শ্রীপুর অংশের জয়দেবপুর থেকে জৈনা বাজার পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার সড়কে ইতিপূর্বে ১টি ভাগাড় থাকলেও গত কয়েকদিনে নতুন করে বেশ কয়েকটি ভাগাড় তৈরী হয়েছে।আর এতে বর্জ্যের উৎকট দুর্গন্ধে যেমন চলাচল কারী লোকজনদের দুর্ভোগ পোহাতে হয় তেমনি চার লেনের সৌন্দর্যও বিনষ্ট হচ্ছে।
মহাসড়কের পাশে বর্জ্যের ভাগাড়গুলো লেন দখল করে গড়ে উঠলেও কর্তৃপক্ষ শুধু ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দায় সেরে ফেলছেন। গাজীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৯৬৭-১৯৬৮ সালে সাধারন মানুষের কাছ হতে জমি অধিগ্রহন করে এই সড়ক নির্মান করা হয়। পরে বিভিন্ন সরকারের ধারাবাহিক উন্নয়ন ও সর্বশেষ বর্তমান সরকারের মেগাপ্রকল্পের মাধ্যমে এই সড়কটি চারলেনে রুপান্তর করা হয়। চারলেনে রুপান্তরের পরও সড়কের উভয় পাশের বেশ কিছু জমি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। আর এ সুুযোগটি গ্রহন করেছে বিভিন্ন জন।
বিভিন্ন জন যেমন সড়কের জমিতে অবাধে গড়ে তুলেছে স্থাপনা তেমনি সড়কের জমি দখল করে মহাসড়কের উপর গড়ে তুলেছে বাজার। এতে প্রতিনিয়ত মহাসড়কটি অনিরাপদ হয়ে উঠছে। সম্প্রতি মহাসড়কের পাশের বিভিন্ন এলাকায় বসবাসরত লোকজন তাদের জমানো বর্জ্য মহাসড়কের পাশে অপসারণ করছে। এতে তৈরী হচ্ছে ভাগাড়। প্রতিদিন এসব বর্জ্য থেকে তৈরী হয় প্রকট দুর্গন্ধ ফলে চলাচলকারী মানুষদের দুর্ভোগ বাড়ে।
এছাড়াও মানুষের ব্যবহার্য বর্জ্য, মৃত বিভিন্ন প্রাণী,হাসপাতালের ব্যবহার্য বর্জ্য অপসারন করায় পরিবেশের উপর যেমন বিরুপ প্রভাব ফেলে তেমনি জনমানব সৃষ্ট এলাকায় সংক্রামক ব্যাধির আশংকাও রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, গত কয়েক বছর ধরে মহাসড়কের শ্রীপুর পৌর এলাকার গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ী খাল ও সড়কের লেন দখল করে বর্জ্যের ভাগাড় গড়ে তুলেছে শ্রীপুর পৌরসভা। বেশ কয়েকবার স্থানীয়রা এই বর্জ্যরে ভাগাড় সরানোর দাবীতে নানা ধরনের আন্দোলন ও প্রতিবাদ করলেও কারো টনক নড়েনি। আর পৌর কর্তৃপক্ষ শুধু কয়েকবছর ধরে এটি সরিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।
বর্তমানে নতুন করে মহাসড়কের গাজীপুর সদরের ভবানীপুর, শ্রীপুরের তেলিহাটি ইউনিয়নের রঙিলা বাজার (মুলাইদ), এমসি বাজারের ইউটার্ন সংলগ্ন ও জৈনাবাজারেন বর্জ্যরে ভাগাড় তৈরী হয়েছে। এ বিষয়ে শ্রীপুর পৌর মেয়র আনিছুর রহমান জানান, পৌরসভার অভ্যন্তরে ময়লা আবর্জনা ফেলানোর জায়গা সংকটের কারনে মহাসড়কের অব্যবহৃত স্থানে বর্জ্য অপসারন করা হচ্ছে। তবে দীর্ঘদিনের জনদুর্ভোগ বিবেচনায় বর্জ্য অপসারনের নির্দ্দিষ্ট স্থান খোঁজা হচ্ছে। জায়গা পেলেই এ সংকটের সমাধান হবে।
তেলিহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বাতেন সরকার জানান, নতুন করে বর্জ্যরে ভাগাড় সৃষ্টির বিষয়টি তাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এসব বর্জ্যরে ভাগাড় দুর্ভোগ তৈরী করছে। সাথে লেন দখল করায় দুর্ঘটনার ঝুঁকিও রয়েছে। মহাসড়কের পাশে এভাবে বর্জ্য ফেলে জনদুর্ভোগ তৈরীর বিষয়ে স্থানীয় শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ ইকবাল সিদ্দিকী জানান, এগুলো আমাদের সুষ্ঠ মানসিকতার অভাবের কারনে হয়েছে।
পৃথিবীর কোন সভ্য দেশে সড়কের পাশে নানাধরনের বর্জ্য অপসারনের নজির নেই। কর্তৃপক্ষের নজরদারীর অভাবকেও দায়ী করা যেতে পারে। হাজার কোটি টাকা খরচ করে মহাসড়ককে চারলেনে গড়ে তোলা হলেও নানাধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরী করায় এর সুফল পাচ্ছে না সাধারন মানুষ।
আনন্দবাজার/শাহী/মহিউদ্দিন