ঢাকা | শুক্রবার
২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাছ রক্ষার জালে চলছে পাখি নিধন

মাছ রক্ষায় পুকুরের ওপর টাঙানো হচ্ছে জাল। আর সেই জালই মরণফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে পাখিদের জন্য। মাছ খাওয়ার লোভে জালের ওই ফাঁদে আটকে মারা যাচ্ছে সব পাখি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পুকুরের ওপর জাল লাগানোয় মাছ বেচে যাচ্ছে এবং টাকাও আসছে। তাই পানকৌড়ি মরল, কি মাছরাঙার ডানা ছিঁড়ল- তা দেখার সময় নেই মাছ চাষিদের। পাখি নিধনের এমন চিত্র বগুড়ার ধুনট উপজেলার নানা এলাকার পুকুর কিংবা জলাশয়ে।

বর্তমানে মৎস্যচাষ বেশ লাভজনক একটি পেশা। বিশেষ করে বেকার যুবকদের অনেকেই এখন ঝুঁকে পড়ছে মাছচাষের দিকে। লাভের অঙ্কটাও ফেলে দেওয়ার মতো নয়। কিন্তু এরই মধ্যেই বড় ভুল করছেন মাছচাষিরা। জলাশয় কিংবা পুকুরের মাছ সংরক্ষণের তাগিদে পাখির আক্রমণ থেকে বাঁচাতে চাষিরা ব্যবহার করছেন ফাঁদ জাল। এতে মাছ খেতে গিয়ে সেই ফাঁদে আটকে পড়ে মারা যাচ্ছে পাখি।

তবে আগে পাখি তাড়াতে পুকুরের ধারে কাকতাড়ুয়া দেখা যেত। অনেকে পুকুরে খুঁটি পুঁতে তাতে ফিতে টানিয়ে দেওয়ায় বাতাসে ফিতার পতপত শব্দে পাখি আসতো না। অথবা টিনে শব্দের ব্যবস্থা করা হতো, শব্দে ভীত হয়ে পাখি মাছ খেতে আসতো না। কিন্তু এখন জলাশয়ের ওপরটা ঘিরে রাখা হয় জাল-সুতোয়। যাতে মাছ খেতে মাছরাঙা, পানকৌড়ি বা বক নামতে না-পারে। কিন্তু এরপরও খাবারের খোঁজে এসে কত মাছরাঙা-পানকৌড়ির যে ওই জাল-সুতোয় আটকে প্রাণ যাচ্ছে তার হিসেব নেই। ব্যাপারটি নিয়ে বেশ সোচ্চার হয়েছেন স্থানীয় পাখিপ্রেমীরা। প্রশাসনের হস্তক্ষেপেরও দাবি তুলেছেন তাঁরা।

এই ব্যাপারে উপজেলার একাধিক পুকুর মালিক বলেন, প্রতিবছর পুকুরে অনেক টাকার মাছ ছাড়া হয়। কিন্তু পাখি তা খেয়ে নেয়। বছর শেষে লাভের মুখ দেখা যায় না। তাই পুকুর জাল দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। তবে মাছ রক্ষার জালে পাখি আটকে মারা যাচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে পুকুর-মালিকরা কোনো কথা বলেননি।

ধুনট উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মীর্জা ওমর ফারুক জানান, পুকুরে যেন কোনো গাছের লতাপাতা ঝরে না পড়ে, সে জন্য জালের ব্যবহার করা যায়। কিন্তু জালে আটকে পাখি মরার কোনো ঘটনা আমার জানা নেই। এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকলে মাছচাষিদের সচেতন করতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আনন্দবাজার/এইচ এস কে

সংবাদটি শেয়ার করুন