শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝালকাঠিতে ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৩৭৮ টি পরিবারে গৃহনির্মান

ঝালকাঠি জেলার ৪টি উপজেলায় দরিদ্র ও অস্বচ্ছল পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর গৃহনির্মান প্রকল্পের আওতায় ১৩৭৮টি পরিবারকে গৃহনির্মান করে দেয়া হয়েছে। সরকার এই খাতে ১৯ কোটি ৭২ লক্ষ ২৭ হাজার ৭শত ৪২ টাকা ব্যয় করে এই গৃহনির্মান করে দিয়েছেন। মাঠ পর্যায়ে গৃহনির্মান প্রকল্প বাস্তবায়নে উপজেলা প্রকল্প বায়স্তবায়ন কর্মকর্তাদের জনবল সংকট এই প্রকল্প বাস্তবায়নে বড়বাধা হয়ে দেখা দিয়েছে।

ঝালকাঠি জেলায় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় গৃহনির্মান প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে। ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছর থেকে শুরু করে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছর পর্যন্ত তিন বছরে ১০ কোটি ৭৮ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা ব্যয়ে ১০৬৭টি ঘর নির্মান করা হয়েছে। এছাড়াও সরকার ত্রাণ ও পূনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের টেষ্ট রিলিফ (টিআর) প্রকল্পের অর্থ দিয়ে ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছর থেকে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে ৮ কোটি ৭৩ লক্ষ ৮৭ হাজার ৭শত ৪২ টাকা ব্যয়ে ৩১১টি গৃহনির্মান করে দিয়েছেন। টিআর ও কাবিখা প্রকল্পের অর্থ অপচয় রোধ করে এই ধরনের গৃহনির্মান প্রকল্প একটি বাস্তব সম্মত সিদ্ধান্ত হিসাবে প্রসংশিত হয়েছে।

শুরুর বছর ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে আশ্রয়ণ প্রকল্প- ২ এর আওতায় প্রতিটি গৃহনির্মানের জন্য ১ লক্ষ টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়েছিল এবং পরবর্তী ২ বছর গৃহনির্মান খাতে ঘর প্রতি ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে অর্থ বরাদ্ধ করা আসছে। বর্তমানে এই প্রকল্পের আওতায় ১ কোটি ৮৮ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা ব্যয়ে ১৫৭ টি গৃহনির্মানের কাজ শেষ পর্যায়ে। অন্য দিকে ত্রাণ ও পূনরবাসন মন্ত্রণালয়ে ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছর থেকে প্রতি ঘরের জন্য ২ লক্ষ ৫৮ হাজার ৫শত ৩১ টাকা করে ব্যয়ে ১৪২টি গৃহ নির্মানে ৩ কোটি ৬৭ লক্ষ ১১ হাজার ৪ শত টাকা ব্যয় করেছে। ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে ঘরের ব্যয় বরাদ্ধ বাড়িয়ে ২ লক্ষ ৯৯ হাজার ৮ শত ৬০ টাকা ব্যয় করে ৪টি উপজেলায় ৫ কোটি ৬ লক্ষ ৭৬ হাজার ৩শত ৪০ টাকা ব্যয় ১৬৯টি গৃহ নির্মানের কাজ করা হচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ  ৮ কোম্পানি স্পট মার্কেটে যাচ্ছে রবিবারে

যে সকল গরিব ও অস্বচ্ছল পরিবারে নিজস্ব জায়গা রয়েছে কিন্তু বসত গৃহ জড়াজীর্ণ। অর্থ অভাবে বাসযোগ্য ঘর নির্মান করতে পারছেন না এমন সব পরিবারকে প্রধানমন্ত্রী গৃহনির্মান করে দিচ্ছেন। ঝালকাঠি জেলার ৪টি উপজেলার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্প- ২ এর আওতায় সদর উপজেলায় ৩৫৬টি, নলছিটি উপজেলায় ৩৫৭ টি এবং ছোট ২টি উপজেলা রাজাপুর উপজেলায় ২০১টি ও কাঠালিয়া উপজেলায় ১৫৩টি গৃহনির্মান করা হয়েছে। ত্রাণ ও পূনবাসন মন্ত্রণালয়ধীন গৃহনির্মান প্রকল্পের মধ্যে ঝালকাঠি সদর উপজেলায় ৭৩টি, নলছিটি উপজেলায় ৯০ টি, রাজাপুর উপজেলায় ৮১টি এবং কাঠালিয়া উপজেলায় ৬৭টি গৃহনির্মান করা হয়েছে।

প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানগণ সুবিধা ভোগীদের নির্বাচন করে তালিকা তৈরী করেন। এই তালিকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হয়। জেলা প্রশাসক মাঠপর্যায়ে সরকারি কর্মকর্তাদের দিয়ে তালিকা যাচাই বাছাই করে সুবিধাভোগীদের তালিকা চুড়ান্ত করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রেরণ করেন। পরবর্তীতে অর্থ বরাদ্ধের পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে গৃহনির্মান প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানগণ স্বস্ব ইউনিয়নে সমন্বয় ও তদারকীর কাজ করেন।

ঝালকাঠি জেলায় ৪টি উপজেলার মধ্যে ২টি উপজেলায় প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রয়েছে। অন্য ২টি উপজেলায় অতিরিক্তি দায়িত্ব হিসাবে এই ২জন উপজেলায় প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ৪টি উপজেলারই দায়িত্ব পালন করেন। এ কারনেই মাঠ পর্যায়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে তারা তাদেরকে হিমসিম খেতে হচ্ছে এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে পর্যাপ্ত জনবলের অভাবেই নিবির তদারকীর ক্ষেত্রে এই জনবল সংকট বড় বাধা হয়ে দাড়িয়েছে বলে দাবী করেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা।

আরও পড়ুনঃ  ধর্ষণবিরোধী মিছিলে পুলিশের বাধা

আনন্দবাজার/শাহী/বাঁধন

সংবাদটি শেয়ার করুন