সম্প্রতি বন্যার পানি কমতে শুরু করায় সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীতে অনেক ভাঙন শুরু হয়েছে। ফলে বিলীন হওয়ার পথে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরি, জালালপুর, খুকনি এবং সোনাতনী ইউনিয়নের কমপক্ষে ১৭টি গ্রাম। এ বছরের বর্ষা মৌসুমে এরইমধ্যে এসব গ্রামের ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ এলাকা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে এসব এলাকার কয়েক শ হতদরিদ্র মানুষের বাড়িঘর, জমিজমা হারিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
গ্রামগুলো হচ্ছে ব্রাহ্মণগ্রাম, আরকান্দি, ঘাটাবাড়ি, পাকুরতলা, বারপাখিয়া, মাকড়া, বাঐখোলা, কুঠিপাড়া, ভেকা, পাঁচিল, চিলাপাড়া, শ্রীপুর, সোনাতনী, চরঠুটিয়া, বানতিয়ার, ছোট চানতারা ও ভারদীঘুলিয়া। এসব গ্রামের বাকি অংশও বিলীনের পথে।
জানা গেছে, ভাঙনে ইতোমধ্যে দুই শতাধিক বাড়িঘর, দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, একটি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র, দুটি ঈদগাহ, ১০০টি তাঁত কারখানা, ৪০০ বিঘা আবাদি জমি, তিন কিলোমিটার কাঁচা সড়ক, একটি কবরস্থান, একটি শ্মশানঘাট, একটি মন্দির ও বহু গাছপালা বিলীন হয়েছে।
পাঁচিল গ্রামের ওয়াহেদ আলী বলেন, ভাঙনে ইতিমধ্যে ওই সব গ্রামের ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ এলাকা নদীতে বিলীন হয়েছে। দ্রুত ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়া হলে অচিরেই তাদের ঘরবাড়ি হারিয়ে পথে বসতে হবে। তাই তারা এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু পদক্ষেপ কামনা করেন।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ মো. শামসুজ্জোহা জানান, কয়েক দিন আগে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অনুরোধ করেছি।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন বলেন, এ ভাঙন রোধে ব্রাহ্মণগ্রাম থেকে হাট পাঁচিল পর্যন্ত তিন কিলোমিটার এলাকায় প্রায় সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থায়ী বাঁধ এবং তীর সংরক্ষণ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে এ সমস্যা আর থাকবে না। করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রকল্পটি একনেকে পাস হতে বিলম্ব হচ্ছে। প্রকল্পটি পাস হলেই কাজ শুরু করা হবে।
আনন্দবাজার/এইচ এস কে