সম্প্রতি কুমিল্লা মনোহরগঞ্জ উপজেলায় গৃহবধূ লিপি আক্তার (২৫) এর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহত গৃহবধূর স্বামীর পরিবার প্রথমে স্ট্রোক ও পরে আত্মহত্যার বললেও ওই গৃহবধূর ভাই যৌতুকের দাবিতে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন।
কুমিল্লার বিঙ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৩২ ধারায় দায়েরকৃত মামলায় গৃহবধূ স্বামী দোলোয়র হোসেন (৩৩) শ্বশুর খুরশিদ আলম (৫০) সহ ৯ জনকে আসামী করা হয়েছে। মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারী লাঙ্গলকোট উপজেলার হেসাখাল গ্রামের ইদ্রিস মিয়ার মেয়ের সাথে মনোহরগঞ্জ উপজেলা কৈয়ারপাড়া গ্রামের খুরশিদ আলম ছেলে দেলোয়ার হোসেন সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর লিপি আক্তার দুই পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। বিয়ের পর থেকে লিপি আক্তার কে তার পরিবারের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিলো। যৌতুকের দাবিতে বিভিন্ন সময় লিপির উপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়। কিন্তু লিপির পরিবার যৌতুক দিতে অস্বীকৃতি জানায়, এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গত ৩ আগষ্ট (সোমবার) ২ টার দিকে স্বামী দেলোয়ার হোসেন, শ্বশুর খুরশিদ আলম সহ তাদের পরিবারের লোকজন লিপি আক্তার কে ঘুমান্ত অবস্থায় শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
কিন্তু গৃহবধূর হত্যার ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য রশি দিয়ে লিপির মরদেহ ঘরের সিলিংয়ে ঝুলিয়ে রাখে। পরবর্তীতে দেলোয়ার ও তার পরিবার লিপির বাবাকে ফোন করে লিপির স্ট্রোক করার কথা জানান। খবর পেয়ে লিপির পরিবার সাথে সাথে ছুটে গিয়ে স্বামীর বাড়ির উঠানে তার মরদেহ দেখতে পান। এ সময় তারা লিপির কাপড় সরালে তার গলায় আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান। লিপির স্বামী ও শ্বশুর লিপি আত্মহত্যা করেছে বলে তাদেরকে জানায়। কিন্তু তারা লিপির গলায় আঘাতের কারণ জানতে চাইলে তার স্বামী ও শ্বশুর সহ অন্যন্য আসামীরা তাদেরকে মারধর করে।
লিপির ভাই আমান উল্লাহ বিষয়টি স্থানীয় উওর হাওয়ালা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান হিরনকে জানালে তিনি পুলিশকে এ ব্যাপারে অবহিত করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লিপির মরদেহ উদ্ধার করে।
মামলার বাদী আমান উল্লাহ জানান, আমার বোন লিপিকে যৌতুকের জন্য তারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমি আমার বোনের হত্যা কারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। এ বিষয়ে ফোনে চেষ্টা করে ও স্বামীর পরিবারের কারো বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
আনন্দবাজার/শাহী/শাওন