ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সৈয়দপুরে গৃহবধূ আকলিমা হত্যার ঘটনায় স্বামী আটক

সম্প্রতি নীলফামারীর সৈয়দপুরে ধানক্ষেত থেকে তিন সন্তানের জননী গৃহবধূ আকলিমা খাতুনের গলায় ফাঁস লাগানো লাশ উদ্ধারের ঘটনায় একদিন পর মামলা দায়ের করা হয়েছে। রবিবার ২৩ আগস্ট সকালে মৃত আকলিমার মা মমতাজ বেগম বাদী হয়ে মামলাটি করেছে। এতে আকলিমার আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়েছে তার স্বামী মোঃ শরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

অভিযোগে জানানো হয়েছে, কিসামত কামারপুকুর গ্রামের মৃত আবেদ আলীর মেয়ে আকলিমাকে বিয়ের পর থেকেই শারীরিক নির্যাতন করে চলেছে শরিফুল। এনিয়ে কয়েকবার পারিবারিকভাবে শালিসি মিমাংসা করা হয়েছে। মূলত শরিফূলের অন্য নারীর সাথে আগে থেকেই সম্পর্ক ছিল। এ কারণে আকলিমার সাথে প্রায়ই অকারনেই ঝগড়া বিবাদ সৃষ্টি করতো শরিফুল। তারপরও আকলিমা বাবার সংসারের অভাব অনটনের কথা ভেবে মুখ বুঝে সব সহ্য করে সংসার করে যাচ্ছিল এর মধ্যে আকলিমা তিন সন্তানের মা হয়েছে। ভেবেছিল সন্তানদের কথা ভেবে একসময় তার স্বামীর চরিত্র ভালো হবে সে পরকিয়া থেকে ফিরবে। কিন্তু না তা আর হয়নি বরং ইদানিং শরিফুল পরকিয়ায় আরও বেশী ঝুকে পড়ে। এতে বাধা দেয়ায় গত ১৫ আগস্ট শনিবার বেধড়ক মারপিট করে বাড়ী থেকে বের করে দেয় আকলিমাকে।

বাধ্য হয়ে স্বামীর বাড়ী দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার হাবড়া ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রাম থেকে বাবার বাড়ী নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের কিসামত কামারপুকুর গ্রামে চলে আসে। এখানে থাকাবস্থায় গত ২০ আগস্ট বৃহস্পতিবার শরিফুল তালাকের কাগজ পাঠায় আকলিমার কাছে তার বাবার বাড়ীতে। এমতাবস্থায় গত ২২ আগস্ট শনিবার সকালে আকলিমার লাশ উদ্ধার করা হয় কামারপুকুর মতস্য উন্নয়ন উপকেন্দ্রের পশ্চিম দিকে বালাডাঙ্গা নামক স্থানে ধান ক্ষেত থেকে।

এ ঘটনায় পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে ধারনা করে যে, শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ ধানক্ষেতের মাঝে বিদ্যুতের পোলের সাথে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। পরে দড়ি ছিঁড়ে লাশ নিচে পড়ে গেছে। এজন্য স্বামী শরিফুলের দিকে হত্যার সন্দেহের তীর তাক করা হয়। সে অনুযায়ী শনিবার বিকেলেই শরিফুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞেসাবাদে জানা যায়, আকলিমা বাবার বাড়ীতেই অবস্থান করছিল। যা তার পরিবারের লোকজন আগে জানায়নি পুলিশ কে। এমনকি সকালের দিকে আকলিমার লাশ দেখার পরও তা সনাক্ত করতে বা তার পরিচয় নিশ্চিত করেনি তার ভাইয়েরা।

এ পরিস্থিতিতে পুলিশ রোববার দুপুরে আকলিমার তিন ভাই হাবিব, রুবেল ড্রাইভার ও মাসুদকে জিজ্ঞেসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। এতে তারা জানায় আকলিমা ঘটনার দিন ভোর ৬ টায় বাড়ী থেকে বের হয়ে যায়। তারপর থেকে অনেক খোজাখুজি করেও তার কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছিলনা। পরে দুপুরে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আকলিমার ভাইদের জিজ্ঞেসাবাদ চলছে।

সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল হাসনাত খান জানান, লাশ গতকালই ময়নাতদন্তের জন্য নীলফামারী জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে এবং আটক শরিফুলকে রোববার সকালে জেলা হাজতে প্রেরন করা হয়েছে।

আনন্দবাজার/শাহী/মনন

সংবাদটি শেয়ার করুন