দেশের তুলার উৎপাদন বাড়াতে ৬৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকার নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। ‘তুলার গবেষণা উন্নয়ন ও প্রযুক্তি হস্তান্তর’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে তুলার আমদানি কমবে, এতে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র এসব তথ্য জানায়।
সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে উচ্চফলনশীল, জলবায়ু অভিযোজনশীল, স্বল্পমেয়াদি, খরা ও লবণাক্ততা সহনশীল এবং মানসম্পন্ন আঁশ উৎপাদনকারী জাতের উন্নয়ন ও প্রযুক্তি হস্তান্তর কার্যক্রম সম্পাদনে তুলা উন্নয়ন বোর্ডের সক্ষমতা বাড়বে। কৃষকের আয় বাড়ানো ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনেও সহায়ক হবে বলে মনে করে কৃষি মন্ত্রণালয়।
এছাড়া তুলার উৎপাদন বাড়ানোর জন্য উচ্চফলনশীল ও প্রতিকূলতা সহনশীল জাতের উন্নয়ন, আঁশের গুণগত মানের উন্নতি সাধন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খায় এমন লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি হস্তান্তর, তুলার জার্মপ্লাজম সংগ্রহ ও সংরক্ষণ, উচ্চফলনশীল, খরা ও লবণাক্ততা সহনশীল এবং মানসম্পন্ন আঁশ উৎপাদনকারী জাতের উন্নয়ন ও প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং জলবায়ু পরিবর্তনশীল এলাকায় তুলা চাষ সম্প্রসারণের জন্য জলবায়ু অভিযোজনশীল তুলার জাত এবং প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি হস্তান্তরই হবে এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম এই সাত বিভাগের ৪২টি জেলার ১৩৪টি উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। জেলাগুলো হচ্ছে-খুলনা, সাতক্ষীরা, যশোর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা, বরিশাল, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, বরগুনা, রাজশাহী, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জয়পুরহাট, পাবনা, রংপুর, গাইবান্ধা, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, ঢাকা মেট্রোপলিটন, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে। সরকারের নিজস্ব তহবিল (জিওবি) থেকে প্রকল্প ব্যয়ের মোট ৬৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকার পুরোটাই অর্থায়ন করবে। প্রকল্পটি ২০১৯-২০ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দবিহীনভাবে সংযুক্ত নতুন অননুমোদিত প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এদিকে বাণিজ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের গার্মেন্টস কারখানাগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় কাপড়ের বেশিরভাগই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হতো। দেশের কারখানায় তুলার চাহিদার ৯৭ শতাংশ আমদানি করে আনতে হয়। ভারত, পাকিস্তান, উজবেকিস্তান ও আফ্রিকার দেশগুলো থেকে এই তুলা আমদানি করা হয়।
বাংলাদেশ কটন অ্যাসোসিয়েশন সূত্র জানিয়েছে, রফতানি আয়ের ৮৫ শতাংশ তৈরি পোশাক তৈরিতে গত এক বছরে বাংলাদেশের ৬৫ লাখ বেল তুলার প্রয়োজন হয়। গতবছর বছরে তুলার আমদানি হয়েছে ৭০ লাখ বেল। বর্তমানে প্রায় ৫ হাজার গার্মেন্টস কারখানা ৪২৫টি স্পিনিং মিল ও প্রায় ৮০০ টির মতো টেক্সটাইল কারখানায় আমদানি করা তুলা থেকে তৈরি সুতা ব্যবহার করা হচ্ছে।
আনন্দবাজার/শহক