দেশের উত্তরাঞ্চলের ৮ জেলার কোরবানির পশুর চামড়ার দাম সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। দুই থেকে আড়াইশ টাকা দামে চামড়া কিনছে আড়তদাররা। অন্যদিকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা গড়ে ৫০০ টাকা দরে পশুর চামড়া কিনে পড়েছেন বিপাকে। চামড়া বিক্রি করতে না পেরে অনেকে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছেন। অনেকেই আবার স্থানীয় মাদ্রসাগুলোতে বিনা মূল্যে দিলেও তারাও নিতে চাইছে না।
সরেজমিনে রংপুর নগরীর শাপলা চত্বর সংলগ্ন চামড়া পট্টি এলাকায় দেখা গেছে, মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া নিয়ে এসে বিপাকে পড়েছেন। কারণ আড়তদাররা দুই থেকে আড়াইশ টাকার বেশি দাম বলছেন না।
মৌসুমি ব্যবসায়ী মমতাজ উদ্দিন এসেছেন লালমনিরহাট থেকে। তিনি জানান, ২০০ বেশি চামড়া কিনেছেন। গড়ে ৫০০ টাকা দাম পড়েছে। আড়তদাররা বলছেন, দুই থেকে আড়াইশ’ টাকার বেশি দামে তারা চামড়া কিনতে পারবেন না।
একই অভিযোগ নগরীর সিও বাজার এলাকার মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী সোহেলের। তিনি জানান, তিনশ’ চামড়া কিনেছেন গড়ে ৪০০ টাকা দরে। কিন্তু আড়তদাররা বলছেন ২০০ টাকার বেশি দামে কেনা যাবে না। ফলে তাদের পুঁজি হারানোর শঙ্কায় পড়েছেন।
আড়তদার সালামতুল্লা জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গরুর চামড়া দর বেঁধে দিয়েছে প্রতিফিট ২২-২৪ টাকা। একটা গরুর চামড়া সর্বোচ্চ ২০ ফুট হওয়ায় দাম পড়ে মাত্র চার থেকে সাড়ে চারশ’ টাকা। একটা চামড়া লবণ দেওয়া, লেবার খরচসহ দেড় থেকে দুইশ’ টাকা পড়ে। সে কারণে তাদের পক্ষে দুই থেকে আড়াইশ’ টাকার বেশি দামে চামড়া কেনা সম্ভব নয়।
এদিকে চামড়ার ন্যায্য মূল্য এবং খদ্দের না পাওয়ায় অনেকেই চামড়া ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছেন। নগরীর জুম্মাপাড়া মাদ্রাসা ও সিও বাজার মাদ্রাসা প্রতিবছর চামড়া ক্রয় করে তারা নিজেরাই চামড়া প্রক্রিয়াজাত করে বিক্রি করে।
এ ব্যাপারে রংপুর বিভাগীয় চামড়া আড়তদার সমিতির সভাপতি আব্দুল লতিফ খানের অভিযোগ, ৫৩ বছরের চামড়া ব্যবসার জীবনে দাম এত কম কোনও দিন দেখেননি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেওয়া দরেই চামড়ার দাম কমিয়ে ফেলা হয়েছে।
আনন্দবাজার/শহক