নীলফামারী জেলার গ্রামাঞ্চলে ঘুর ঘুরে কম মূল্যে চামড়া কিনেও বিক্রি করতে গিয়ে লোকসান হওয়ার দাবি করেছেন মৌসুমী ব্যাবসায়ীরা। গরুর চামড়া ১০০ থেকে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা ও ছাগলের চামড়া বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়।
শনিবার (০১ আগস্ট) সকালে সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনেই জেলা শহর ও উপজেলা গুলোতে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। তবে সকালে বৃষ্টির কারণে জামাতে কিছুটা বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নামাজ আদায় করা হয়।
নীলফামারী জেলা প্রশাসক মোঃ হাফিজুর রহমান চৌধুরী জানান, মসজিদে মসজিদে ঈদের জামাতের জন্য আগেই নির্দেশনা দিয়ে প্রতিটি সুরক্ষা সামগ্রী দেওয়া হয়েছিল। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় তৎপর ছিল পুলিশ ও আনসার বাহিনী। ফলে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে, কোরবানির চামড়া নিয়ে চরম বিপাকে পড়েন অনেকে। দাম নেই, ক্রেতাও নেই। ফলে অনেকে বাধ্য হয়ে বড় গরুর চামড়া ২০০ টাকা ও ছোট গরুর চামড়া মাত্র ১০০ টাকায় বিক্রি করেছেন। ছাগলের চামড়া কেনা-বেচা হয়েছে মাত্র ৩০ থেকে ৪০ টাকায়।
জেলার সদরের ডাক বাংলো এলাকার মোঃ সাহিদ ইসলাম বলেন, তিনজন মিলে ৭৫ হাজার টাকার গরু কোরবানি দিয়েছিলাম। চামড়া বিক্রি করেছি মাত্র ৩শ টাকায়। চামড়ার মুল্য পানির দরে হওয়ায় অনেকে চামড়া এতিম খানায় দান করেছেন।
ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, এক লাখ ৫ হাজার টাকার গরুর চামড়া যদি ৩০০ টাকা বলে তাহলে কেমন লাগে বলেন, সরকার যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সেই অনুযায়ী এই চামড়ার দাম হয় সর্বনিম্ন এক হাজার ৩০০ টাকা। তাহলে এত কম দামে কেন চামড়া বিক্রি করব? এই কারণে এতিমখানায় চামড়া দিয়ে দিয়েছি। ছাত্ররা এসে নিয়ে গেছে।
জেলার জলঢাকা উপজেলার মোঃ জোবায়দুল ইসলাম বলেন, আগে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা চামড়া কেনার জন্য আসত। চামড়া নেয়ার জন্য কাড়াকাড়ি করত। গত দুই বছর যাবত চামড়া ব্যবসায় তাদের লোকসান গুনতে হয়েছে। ফলে চামড়া বিক্রির জন্য কোন লোক পাইনি। মসজিদের হুজুরের কাছ থেকে নম্বর নিয়ে মাদরাসায় ফোন দিলাম। তারা এসে নিয়ে গেছে। চামড়া গরিবের হক। এতিমখানায় গরিব ছেলে পড়া লেখা করে তাদের জন্যই দান করে দিলাম।
এবছরও চামড়ার দাম কমে যাওয়ায় আলেম সমাজ ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন। তারা অনেকে বিভিন্ন পরিবহনে করে চামড়া সংগ্রহ করে পাইকারি বাজারে নিয়ে বিক্রি করার সময় দাম দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এতে যানবাহনের ভাড়াও উঠছে না।
আনন্দবাজার/শাহী/মনন