দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, মৎস্য চাষে গতানুগতিক পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে এসে উন্নত ও আধুনিক পদ্ধতি গ্রহণ করার মাধ্যমে দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। আমাদেরকে দেশীয় প্রজাতির মাছ উৎপাদন বাড়াতে করতে হবে। কেননা, দেশে ও দেশের বাইরে আমাদের মাছের প্রচুর চাহিদা আছে।’ এক্ষেত্রে খাতসংশ্লিষ্টদের তৎপর হতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
আজ বুধবার গণভবন লেকে পোনামাছ অবমুক্ত করে ‘জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২০’ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এ উপলক্ষে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
দেশি ও বিশ্ব বাজারে মৎস্যসম্পদের চাহিদার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা জানান, দেশে প্রায় পৌনে পাঁচ শ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ এবং ২৫০ প্রজাতির বেশি স্বাদুপানির মাছ আছে। এ ছাড়া চিংড়ি, কাঁকড়া, শামুকসহ অসংখ্য মৎস্যসম্পদের আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাজারে প্রচুর চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মৎস্য খাতে বিনিয়োগের কারণে একদিকে যেমন নতুন নতুন কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি হয়, তেমনি সমৃদ্ধ হয় জাতীয় অর্থনীতি। মাছের উৎপাদন বাড়িয়ে দেশের জনগোষ্ঠীর শুধু পুষ্টি চাহিদা পূরণ নয়, ব্যাপক কর্মসংস্থান, বিদেশে মাছ রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন আমাদের অন্যতম লক্ষ্য।
তিনি আরও বলেন, গত ১১ বছরে মাছের উৎপাদন ৫০ শতাংশ বেড়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ২০২০ সালের প্রতিবেদন অনুসারে, স্বাদু পানির মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির হারে বাংলাদেশ এবার বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে উন্নীত হয়েছে। দেশ আজ মৎস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বর্তমানে জনপ্রতি দৈনিক ৬০ গ্রাম চাহিদার বিপরীতে আমরা ৬২ দশমিক ৫৮ গ্রাম মাছ গ্রহণ করছি।’
মৎস্য অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্টদের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী জানান, ‘কোভিড-১৯-এর মধ্যেও মৎস্য অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থার কর্মীরা ঝুঁকি নিয়ে মাছের উৎপাদন, বিপণন এবং রফতানি অব্যাহত রেখেছে। দেশের প্রয়োজনে এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।’
মৎস্য খাতের উন্নয়নে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চাষের মাধ্যমে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে দেশবাসীকে অনুপ্রাণিত করতে ১৯৭৩ সালে গণভবনের লেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন। জাতির পিতা পাট, চামড়া, চা‘র সাথে মাছকেও বাংলাদেশের রফতানি পণ্য হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন এবং মৎস্যসম্পদ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের দ্বিতীয় খাত বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন।’
প্রধানমন্ত্রী গণভবন লেকে পোনা মাছ অবমুক্তকরণের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
আনন্দবাজার/এফআইবি