কক্সবাজারে ৬০০ জলবায়ু উদ্বাস্তু পরিবারকে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্পের ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেওয়া হবে। ঢাকা থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কক্সবাজার শহর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে খুরুশকুলে বাঁকখালী নদীর তীরে ২৫৩ একর জমির ওপর গড়ে উঠেছে এই ‘বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্প’। পুরো এলাকাকে চারটি জোনে ভাগ করে ১৩৯টি পাঁচতলা ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে সেখানে।
সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ১৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পের পুরো কাজ শেষ হলে এসব ভবনে বসবাসের সুযোগ পাবে ৪ হাজার ৪০৯টি জলবায়ু উদ্বাস্তু পরিবার, যারা কক্সবাজার বিমানবন্দরের পালে ফদনার ডেইল, কুতুবদিয়া পাড়া ও সমিতি পাড়ায় মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন বহু বছর ধরে।
১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের পর বাস্তুহারা মানুষ বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে কক্সবাজার বিমানবন্দরের পাশে এসব এলাকায় সরকারি খাস জমিতে আশ্রয় নেয়।
১০০১ টাকার নামমাত্র মূল্যে এসব ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেওয়া হবে জলবায়ু উদ্বাস্তু হয়ে জীবন কাটানো পরিবারগুলোকে।
প্রকল্প পরিচালক মো. মাহবুব হোসেন জানান, এটাই দেশের সবচেয়ে বড় আশ্রয়ণ প্রকল্প ও জলবায়ু উদ্বাস্তুদের জন্য দেশের প্রথম আশ্রয়ণ প্রকল্প ।
“জলবায়ু উদ্বাস্তু পরিবারগুলোর জন্য এখানে যে পুনর্বাসন, এটাকে আমরা বিশ্বের বৃহত্তম জলবায়ু পুনর্বাসন প্রকল্প বলতে পারি। এই রকমের প্রকল্প পৃথিবীতে বিরল।”
১৪টি খেলার মাঠ, সবুজ জায়গা, মসজিদ, মন্দির, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পুলিশ ও ফায়ার স্টেশন, তিনটি পুকুর, নদীতে দুটি জেটি, দুটি বিদ্যুতের সাবস্টেশন থাকবে এখানে।
প্রকল্পের আবাসিক ভবনগুলো সব ৫ তলা হলেও একটি ভবন হবে দশ তলা, যার নাম হবে শেখ হাসিনা টাওয়ার। এই ভবনের অবস্থান হবে পর্যটন জোনে।
২০ কিলোমিটার অভ্যন্তরীণ রাস্তা, ৩৬ কিলোমিটার ড্রেনেজ ব্যবস্থা, বর্জ্য পরিশোধন ও নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা, তীর রক্ষা বাঁধ, ছোট সেতু, ঘাটলা ও খাল থাকবে পুরো প্রকল্প এলাকায়।
পরিচালক জানান, আশ্রয়ণ কেন্দ্রে যারা ফ্ল্যাট পাবেন তাদের ঋণ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলা হবে।
যারা ফ্ল্যাট পাচ্ছেন, তাদের অধিকাংশই মৎসজীবী। সে কারণে সেখানে একটি শুঁটকি মহালও থাকবে। সেজন্য বিক্রয় কেন্দ্র ও প্যাকেজিং শিল্পও গড়ে তোলা হবে।
আনন্দবাজার/এফআইবি