কুড়িগ্রামের যাত্রাপুর হাটে বিক্রির জন্য তোলা হয়েছে ভারতীয় গরু।উত্তরের বন্যা পরিস্থিতিতে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে এবার অন্য কৌশলে ভারত থেকে আনা হচ্ছে কোরবানির গরু। উত্তরের এই জেলার সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকা বন্যায় প্লাবিত হওয়ায় ভারতের গরু-মহিষ আনতে চোরা কারবারিরা ব্যবহার করছে এই বানের পানি।
এপারে কুড়িগ্রামের সীমান্ত এলাকায় গরুর হাটগুলোতে এসব গরু-মহিষ বিক্রি করা হচ্ছে।
বন্যার কারণে বিজিবি ও বিএসএফের কাজে বিঘ্ন ঘটায় পাচারকারীরা সুবিধা পাচ্ছে বলে বিজিবির ভাষ্য।
স্থানীয়রা বলেন, ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমার নদসহ বন্যার পানি ভেঙে প্রতিদিন ভেসে আসছে ভারতীয় গরু-মহিষ। দৈ খাওয়া, সাহেবের আলগা, নারায়ণপুর, রলাকাটা, কচাকাটাসহ কয়েকটি সীমান্তের নদীপথে এসব পশু আনা-নেওয়া করছে ভারত বাংলাদেশের চোরাকারবারিরা।
তারা বলেন, সীমান্তবর্তী যাত্রাপুরসহ বেশ কয়েকটি হাটে ভারতীয় গরু-মহিষ বিক্রির জন্য তোলা হচ্ছে। যাত্রাপুর হাটে প্রায় ৫০-৬০ জন ভারতীয় গরুর কারবার করেন। প্রতি হাটে প্রায় ৪০০-৫০০ ভারতীয় ছোটো গরু ও ২০০-৩০০ বড়ো গরু ও মহিষ ওঠে।
সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী যাত্রাপুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, পুরো হাট কাদা-পানিতে থৈ থৈ করছে। এরই মধ্যে চলছিল গরু বেচাকেনা। অবশ্য ভারতীয় বড় গরু ও মহিষগুলো বিক্রির জন্য রাখা হয়েছিল টিনের চালাঘরে। আর দেশি গরুসহ ভারতীয় ছোটো গরুগুলো খোলা স্থানেই বেচাকেনা হচ্ছিল।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন, ভারতীয় গরুর গায়ে এক ধরনের বিশেষ চিহ্ন দিয়ে রাখা থাকে। এসব চিহ্ন থেকে সীমান্তের এপারের গরুর মালিকের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়। সাধারণত নামের আদ্যক্ষর দিয়ে এসব চিহ্ন দেওয়া থাকে।
তবে করোনাভাইরাসের এই পরিস্থিতিতে ক্রেতা স্বল্পতার কারণে কম দামে গরু কিনেও পোষাতে পারছেন না বলে জানান গরু বিক্রেতারা।
যাত্রাপুর হাটের ইজারাদারের প্রতিনিধি জনি শেখ জানান, সীমান্তে কড়াকড়ির কারণে পাচার কমে গেছে। এছাড়া বন্যাও আরেকটি কারণ। যেসব গরু দেখা যাচ্ছে তা অনেক আগেই ভারত থেকে আনা হয়েছে। খামারিরা লালন পালন করে সেসব হাটে তুলছেন।
এদিকে, বিজিবিও মাঝেমধ্যে গরু আটক করছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
বিজিবির ২২ ব্যাটালিয়নের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ জামাল হোসেন জানান, কোরবানির আগ মুহূূর্তে বন্যা হওয়ায় পাচারকারীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বন্যার কারণে বিএসএফ ও বিজিবির পক্ষে অনেক পোস্টে সব সময় অবস্থান করা সম্ভব হচ্ছে না। সেই সুযোগেই গরু পাচারের চেষ্টা হয়।
তবে বিজিবির পক্ষ থেকে গরু পাচারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহন করা হয়েছে। নদীপথে টহল জোরদার করা হয়েছে এবং প্রতিনিয়ত গরু আটক করা হচ্ছে।
আনন্দবাজার/তা.তা