ঢাকা | রবিবার
২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ধর্মপাশায় সিন্ডিকেটে চলছে খাদ্যগুদামে ধান সংগ্রহ

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দীলিপ মজুমদার তার লোকজন নিয়ে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে স্থানীয় খাদ্যগুদামে সরকারি ন্যায্যমূল্যে সরবরাহ করছেন। এতে করে প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে সরকারি ন্যায্যমূল্যে ধান ক্রয় কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। দীলিপ মজুমদার তার ছোট ভাই সম্রাট মজুমদারকে দিয়ে খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার যোগসাজশে সেই সিন্ডিকেট ব্যবসা পরিচালনা করছেন। তারা বিভিন্ন এলাকা থেকে কম মূল্যে ধান সংগ্রহ করে স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে কৃষি কার্ড নিয়ে খাদ্যগুদামে ধান বিক্রয় করছেন।

এ নিয়ে রবিবার স্থানীয় কয়েকজন সংবাদকমী সরেজমিনে খাদ্যগুদাম পরিদর্শনে গেলে দীলিপ মজুমদার সেখানে উপস্থিত হয়ে সংবাদকমীদে‌র ওপর চড়াও হন।

জানা যায়, রবিবার সকালে ধর্মপাশা খাদ্যগুদামের সামনে নদীর ঘাটে ধান বোঝাই একটি বলগেট নৌকা এসে নোঙ্গর করে। খাদ্যগুদামের কার্যক্রম চালু হলে সেই বলগেট নৌকা থেকে বস্তায় করে কৃষক ছাড়া ধান খাদ্যগুদামে উঠানো শুরু হলে স্থানীয়ভাবে বিষয়টি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। খবর পেয়ে দুপুরে সাড়ে ১২টার দিকে বিষয়টি দেখতে উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ইসহাক মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক এমএমএ রেজা পহেলসহ স্থানীয় কয়েকজন সংবাদকর্মীরা খাদ্যগুদামে যান।

এ সময় সম্রাট মজুমদারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি জানান, প্রায় ১ হাজার ৪০০ মণ ধান সুনামগঞ্জের শাল্লা থেকে ব্যবসা করার উদ্দেশ্যে এনেছেন। এ সময় সংবাদকমীরা কৃষক ছাড়া ধান দেওয়ার সুযোগ নেই এমনটি বললে সম্রাট মজুমদার ক্ষেপে গিয়ে তার ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দীলিপ মজুমদারকে ফোন করেন। কিছুক্ষণের মধ্যে দীলিপ মজুমদার খাদ্যগুদামে উপস্থিত হয়ে সংবাদকমীদের ওপর চড়াও হন। এ সময় খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুজন চন্দ্র রায় নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেন।

ঘটনাস্থলে দীলিপ মজুমদার সংবাদকমীদেরকে দেখে নেওয়ার হুমকি ও হুংকার দিয়ে বলেন, ‘মাইর করলে লাঠি নিয়া আয়। সাংবাদিকের কার্ড আমি বানাইতে পারি। ধান দিলে দেখি কে ফিরায়?’

উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এমএমএ রেজা পহেল বলেন, ‘সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ধান সরবরাহ প্রকৃত কৃষকদেরকে বঞ্চিত করছে। সংবাদকমীদ‌রে সাথে আওয়ামী লীগ নেতার এমন অশুভন আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’

ধর্মপাশা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুজন চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমি এর সাথে জড়িত নই। কৃষকদের সাথে নিয়েই উনি (সম্রাট) ধান দিচ্ছেন।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জাকারিয়া মোস্তফা বলেন, ‘এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির রহমান বলেন, ‘কৃষক ছাড়া ধান বিক্রয়ের সুযোগ নেই। যদি এমনটি হয়ে থাকে তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

আনন্দবাজার/এফআইবি

সংবাদটি শেয়ার করুন