ঢাকা | শুক্রবার
৬ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খুন করে জেলে ঢুকে বোনের ধর্ষককে হত্যা

৬ বছর আগে এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে জেলে যায় এক তরুণ। তবে ছোট বোনের ধর্ষণের প্রতিশোধ নিতেই জেলে যান কিশোরীর বড় ভাইও। আর জেলের ভেতরেই বন্দী সেই ধর্ষণকারীকে কুপিয়ে হত্যা করেন সেই ভাই। এ যেন কোনো এক সিনেমার গল্পকেও হার মানায়। কিন্তু এটা সিনেমা নয়, ভারতের দিল্লির তিহাড় জেলখানায় এমনই এক হত্যার ঘটনা ঘটেছে।

মূলত, তিহাড় কারাগারে সাজাপ্রাপ্ত কুখ্যাত অপরাধীরাই থাকেন। সেখানেই ভয়ঙ্কর এ হত্যাকাণ্ড ঘটনা ঘটে গেল। ধাতব বস্তু দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বোনের ধর্ষণকারীকে। মূলত বোনের ধর্ষণের বদলা নিতেই তিনি জেলে ঢোকেন।

গত সোমবার (৩০ জুন) সকালে তিহাড় জেলের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে এমন ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম মহম্মদ মেহতাব (২৭)। তাকে কুপিয়ে খুন করেছে ২১ বছর বয়সী জাকির।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মেহতাব মূলত নিজামুদ্দিন এলাকার বাসিন্দা। আর জাকির দক্ষিণপুরীর বাসিন্দা। দুই পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিনের পরিচয়। সেই সূত্রে জাকিরদের বাড়িতে ভালো যাতায়াত ছিল মেহতাবের। কিন্তু ২০১৪ সালে জাকিরের কিশোরী বোনকে ধর্ষণ করে মেহতাব। তার জেরে আত্মঘাতী হয় এই কিশোরী।

সেই ঘটনায় ২০১৪-তেই সাজা হয় মেহতাবের। সেই থেকে তিহাড় কারাগারে বন্দী ছিল সে। কিন্তু বোনের ধর্ষকের প্রতি রাগ কমেনি জাকিরের। প্রতিশোধের নেশায় ২০১৮ সালে খুন করে তিহাড় জেলখানায় ঢোকে সে। কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়ায় সেসময় জেলের অন্য বিভাগে রাখা হয়েছিল তাকে। সেই থেকে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার অপেক্ষায় ছিল জাকির। এ বছর ২১-এ পা দিতেই ৫ নম্বর ওয়ার্ডে নিয়ে আসা হয় তাকে।

কিন্তু মেহতাবের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে জায়গা করে নিতে জেলের অন্য বন্দীদের সঙ্গে ইচ্ছাকৃতভাবে ঝামেলা করতে থাকে সে। কয়েকজনের সাথে হাতাহাতিও বেধে যায় তার। তাকে ৮ নম্বর জেলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য জেল কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়েছিল জাকির। সেই মতো কিছু দিন আগে তাকে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে নিয়ে আসা হয়। সেদিন থেকেই মেহতাবের ওপর নজর রাখতেও শুরু করে সে।

সোমবার সকালে প্রার্থনায় যোগ দেয়ার ডাক পড়লে দলে দলে কুঠুরি ছেড়ে বেরোতে শুরু করেছিল বন্দীরা। সেই সুযোগে মেহতাবের কুঠুরিতে আসে জাকির। সেখানে তাকে একা পেয়ে একটি ধারাল ধাতব পাত দিয়ে মেহতাবকে এলোপাথাড়ি কোপাতে শুরু করে। তার জেরে মেহতাবের ঘাড়ে, গলায়, পেটে এবং শরীরের একাধিক জায়গায় গভীর ক্ষত তৈরি হয়।

মেহতাবের চিৎকার শুনে ওই কুঠুরিতে ছুটে আসেন বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী। জাকিরকে নিরস্ত করে সরিয়ে নেওয়া হয়। তড়িঘড়ি করে দীনদয়াল উপপাধ্যায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় মেহতাবকে। কিন্তু সেখানে তার মৃত নিশ্চিত করেন চিকিৎসকরা। এই ঘটনায় হরি নগর থানায় জাকিরের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের হয়। জেরায় অপরাধ স্বীকার করে নিয়েছে সে। বোনের ধর্ষণের প্রতিশোধ নিতেই মেহতাবকে খুন করেছে বলে জানায় তিনি।

আনন্দবাজার/তা.তা

সংবাদটি শেয়ার করুন