ঢাকা | সোমবার
২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাংবাদিক নান্নুর মৃত্যুতে স্ত্রী-শাশুড়ির বিরুদ্ধে হত্যামামলা

সম্প্রতি সাংবাদিক মোয়াজ্জেম হোসেন নান্নুর অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনাটি হত্যাকাণ্ড দাবি করে তার স্ত্রী-শাশুড়ির বিরুদ্ধে মামলার করেছেন তার ভাই।

নান্নুর বড় ভাই নজরুল ইসলাম খোকন বাদী হয়ে সোমবার (২৯ জুন) বাড্ডা থানায় এই মামলা করেন বলে জানান থানার ওসি পারভেজ ইসলাম।

এদিকে, নান্নুর স্ত্রী শাহিনা হোসেন পল্লবী (৪৫) এবং শাশুড়ি শান্তা পারভেজকে (৬২) আসামি করা হয়েছে জানিয়ে তিনি জানান, “তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”

পাশাপাশি মামলায় নান্নুর স্ত্রী যে প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন সেই প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীর বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে তার নাম এজাহারে উল্লেখ করা হয়নি।

এছাড়া, মৃত্যুর ১৫ দিন বাদে এই মামলা হওয়ার পর নান্নুর লাশ উঠিয়ে ময়নাতদন্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলেও জানান ওসি।

নান্নু ছিলেন দৈনিক যুগান্তরের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক এবং বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।

গত ১১ জুন রাতে ঢাকার আফতাব নগরের বাড়িতে অগ্নিদগ্ধ হওয়ার পর নান্নুকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

তার মৃত্যুর পর পুলিশ একটি অপমৃত্যুর মামলা গ্রহণ করলেও ঘটনা তদন্তের কথা জানিয়েছিল। পরে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়।

কিন্তু ওই কমিটির কোনো প্রতিবেদন আসার আগেই নান্নুর ভাই হত্যামামলা দায়ের করলেন।

নজরুল এজাহারে জানান, ঘটনার সময় তিনি নড়াইলের গ্রামে ছিলেন। ভগ্নিপতির কাছ থেকেই নান্নুর ‘রহস্যজনকভাবে’ অগ্নিদগ্ধ হওয়ার খবর পান।

মামলার বরাত দিয়ে ওসি আরও জানান, নান্নু অগ্নিদগ্ধ হওয়ার সময় আফতাব নগরে তার নিজের ফ্ল্যাটে স্ত্রী ছাড়াও নান্নুর শাশুড়ি শান্তা পারভেজ ছিলেন। গত ১১ জুন ঘটনার রাতে নান্নু অফিস থেকে বাসায় ফেরার পর স্ত্রীর সাথে ঝগড়া হয়। ঠিক এর কিছু পরেই নান্নু অগ্নিদগ্ধ হন।

নান্নুর স্ত্রী পল্লবী হাসপাতালে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ঘরে তাদের সন্তান স্বপ্নিল ছয় মাসে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গিয়েছিল। রাতে বাসায় ফেরার পর সেই ঘরে নান্নু সুইচ টিপলেই আগুন ধরে যায়।

উল্লেখ্য, নান্নুর মৃত্যুর মাত্র ছয় মাস আগে এবছরের ২ জানুয়ারি ওই একই ঘরে অগ্নিদগ্ধ হয়ে তাদের একমাত্র সন্তান স্বপ্নীল আহমেদ পিয়াস (২৪) মারা যান।

মামলার এজাহারে নান্নু মারা যাওয়ার পর তার স্ত্রী ও তার প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী মিলে শ্বশুর বাড়িতে লাশ দাফন করে বলে অভিযোগ করেছেন নজরুল।

তিনি জানিয়েছেন, তাদের কিছু না জানিয়েই এসব করা হয়েছে। খবর শুনে তার স্বজনদের কেউ কেউ গেলেও নান্নুর স্ত্রী নান্নুর লাশ দেখতে দেয়নি।

এছাড়া মৃত্যুর আগে নান্নুকে কিছু খাওয়ানো হয়েছিল বলেও সন্দেহ প্রকাশ করেন তার ভাই। কিন্তু এসব বিষয়ে নান্নুর স্ত্রী কিংবা শাশুড়ির কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ওসি জানান, “এজাহারের প্রতিটি ঘটনার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হবে। সেই প্রধান নির্বাহী কে, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।

তাছাড়া “তার বাসা থেকে যে স্যুপ আনা হয়েছিল, সেই স্যুপে কিছু মেশানো ছিল কি না, তাও তদন্তের মধ্যে বেরিয়ে আসবে।”

আনন্দবাজার/শাহী

সংবাদটি শেয়ার করুন