করোনা উপসর্গ নিয়ে নমুনা পরীক্ষা করাতে এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ঘুরছে মানুষ। কিন্তু এদের বেশিরভাগই পরীক্ষা করাতে পারছে না।
অনেক চেষ্টায় কোথাও নমুনা দিলেও দিনের পর দিন রিপোর্টের আশায় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৪৩টি জেলায় এখনো কোনো আরটি পিসিআর ল্যাবই স্থাপন করা যায়নি। ফলে উপসর্গ থাকলেও বিপুলসংখ্যক মানুষ রয়ে যাচ্ছেন পরীক্ষা কার্যক্রমের বাইরে।
করোনা উপসর্গ দেখা দিলেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য নমুনা দেওয়া যাবে না। শুধু যারা অনলাইনে নিবন্ধনের সুযোগ পাবে তারাই নমুনা দিতে লাইনে দাঁড়াতে পারবে। এ নিয়ম জানা না থাকায় বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে কোথাও নমুনা পরীক্ষা করানোর সুযোগ না পেয়ে শেষ ভরসা হিসেবে বিএসএমএমইউতে ছুটছে অনেকেই। ইন্টারনেট ব্যবহারের অভ্যাস না থাকা মানুষের প্রশ্ন, তাহলে কোথায় যাবেন তারা?
করোনা টেস্ট করতে আসা একজন জানান, যারা অনলাইনের সাথে অভ্যস্ত না তারা কিভাবে সিরিয়ালের জন্য ফর্ম ফিলআপ করবে। আর, সরকার কিভাবে এটাকে মেইনটেইন করবে?
শুধু বিএসএমএমইউ নয়, রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালেও করোনা পরীক্ষা করাতে গিয়ে সিরিয়াল না পেয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে অনেককে।
এ বিষয়ে এক ভুক্তভোগী জানান, ‘মুগদা জেনারেল হাসপাতালে আসার পর বলে এখানে আনসারের সাথে যোগাযোগ করেন। কারও সাথে যোগাযোগ করার কোন সুযোগ পাইনা। ভিতরে যে ডাক্তাররা আছেন তারা কথা বলতে রাজি না।
দেশে সংক্রমণ শুরুর ১০৩তম দিন পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন হটলাইনে ফোন কল এসেছে প্রায় এক কোটি ১৮ লাখ ৬২ হাজার। তাদের পাঁচ শতাংশেরও কম ব্যক্তি করোনা পরীক্ষার সুযোগ পেয়েছেন। অধিদপ্তরের নথিপত্র বলছে, দেশে এখন ৬০টি ল্যাবে আরটি পিসিআর পদ্ধতিতে পরীক্ষা চলছে, যার ৩০টিই মূলত ঢাকায়, আর সাতটি জেলায় রয়েছে ১৭টি ল্যাব। ঢাকাসহ ২১টি জেলায় ল্যাব বসানো হলেও ৪৩টি জেলায় করোনা পরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেই। এছাড়া, প্রয়োজনীয় জনবল সংকটের কারণে ল্যাবগুলোতে বাড়ছে অপরীক্ষিত নমুনার সংখ্যা।
করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এখন প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। উপসর্গ থাকার পরও অসংখ্য মানুষ পরীক্ষা করানোর সুযোগ পাচ্ছে না। ফলে বাড়ছে কোভিড-১৯ সংক্রমনের ঝুঁকি।
আনন্দবাজার/তা.তা