সরকার নির্ধারিত দাম খোলা বাজারের চেয়ে কম হওয়ায় দেশের অন্যতম বৃহৎ চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগরের চালকল মালিকরা সরকারের ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানে তেমন একটা সাড়া দিচ্ছেন না। যে কারণে চালকল মালিক এবং কৃষকদের অসহযোগিতার কারণে কুষ্টিয়ায় ভেস্তে যেতে বসেছে সরকারের ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান।
উদ্বোধনের এক মাসে লক্ষ্যমাত্রার ১০ ভাগ চালও সংগ্রহ হয়নি। একই অবস্থা ধান সংগ্রহের ক্ষেত্রেও। ধান সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হলেও সংগ্রহ করা গেছে মাত্র ৬ মেট্রিক টন। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান সফলভাবে শেষ করবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন জেলা প্রশাাসন ও খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।
আপদকালীন মজুতের জন্য সরকারি ভাবে প্রতি বছরই আমন ও বোরো মৌসুমে স্থানীয় চালকল মালিকদের কাছ থেকে নির্ধারিত মূল্যে চাল সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। করোনা মহামারির কারণে এবার বোরো মৌসুমে চাল সংগ্রহের এই অভিযানকে অধিক গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এ কারণে এবার ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা বেশি ধরা হয়েছে।
জানা যায়, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চালের মোকাম কুষ্টিয়া জেলা থেকে এবার চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪ হাজার মেট্রিক টন। গত ১৭ মে চাল সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন হলেও এক মাস পর সর্বশেষ বুধবার (১৭ জুন) পর্যন্ত মাত্র চার হাজার মেট্রিক টন চাল কেনা সম্ভব হয়েছে। ধান সংগ্রহ অভিযানের অবস্থা আরও খারাপ। ৬ হাজার মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে জেলায় এবার সর্বশেষ বুধবার পর্যন্ত মাত্র ৬ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে।
জেলা চালকল মালিক সমিতির নেতা জয়নাল আবেদিন প্রধান জানান, দেশের যেসব অঞ্চল থেকে তারা ধান সংগ্রহ করেন সেসব এলাকায় ধানের দাম বেশ চড়া। ওই দামে ধান কিনে সরকার নির্ধারিত মূল্যে চাল সরবরাহ করলে তাদের মোটা অংকের লোকসান গুনতে হবে। সরকার ধানের দাম নির্ধারণ করেছে প্রতি মণ ১০৪০ টাকা। অন্যদিকে বাজারে ক্ষেত্র ভেদে ধান বিক্রি হচ্ছে ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা মণ দরে। যে কারণে কেউই সরকার নির্ধারিত মূল্যে ধান বিক্রি করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।
খাদ্য ক্রয় কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে অভ্যন্তরীণ খাদ্য সংগ্রহ ঠিক রাখতে সরকারের পক্ষ থেকে গ্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেয়া হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এখনই কার্যকর ও সঠিক পদক্ষেপ নেয়া না হলে চলতি ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শেষ পর্যন্ত ভেস্তে যেতে পারে।
আনন্দবাজার/ডব্লিউ এস