ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বর্ষার আগমনে নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত বেড়ার কারিগররা

বর্ষা মৌসুম না আসলেও পাবনা বেড়ার পদ্মা-যমুনা ও হুরাসাগরে গত কয়েকদিন ধরে ভারি বর্ষণ ও বৃষ্টিতে নদীতে ব্যাপক পরিমাণে পানি বাড়ছে। যমুনা নদীর তিনটি পয়েন্টে এখনও চলছে ভাঙন। ইতোমধ্যে পানিতে তলিয়ে গেছে বোরো ধান, বাদাম ক্ষেতসহ কয়েক হাজার বিঘা ফসলি জমি। পানি বাড়ার সাথে সাথে এই এলাকার নৌকার মালিকরা নতুন নৌকা তৈরি ও আগের পুরাতন নৌকা মেরামতের কাজ শুরু করায় স্থানীয় মিস্ত্রীরা পার করছে ব্যস্ত সময়।

ছয়টি নদী ও অর্ধশতাধিক বিল বেষ্টিত পাবনার বেড়া উপজেলার রয়েছে অর্ধশতাধিক চরাঞ্চল। তার মধ্যে প্রায় বাইশটি চরে রয়েছে মানুষের বসবাস। কয়েক হাজার পরিবারের বসবাস এইসব চরে শুকনো মৌসুমে যোগাযোগের জন্য পায়ে হাঁটার পথ থাকলেও বর্ষা মৌসুমে তা একেবারেই থাকে না। জীবন ও জীবিকার জন্য নৌকা নিত্যদিনকার অপরিহার্য জিনিস হয়ে পড়ে তখন।

প্রতিটি গ্রাম প্রতিটি বাড়ি যেন একেকটি আলাদা আলাদা দ্বীপ। তাই বর্ষা মৌসুমে যোগাযোগের জন্য নৌকাই একমাত্র ভরসা। করোনা পরিস্থিতির কারণে ছেলেমেয়েদের স্কুলে যাওয়া আসা বন্ধ তাকলেও জীবন জীবিকার জন্য অসুখে বিসুখে জরুরী প্রয়োজনে হাসপাতালে পৌছানো সব কাজেই প্রয়োজন হয় নৌকার। তাছাড়া মাছ ধরা তো আছেই।

উপজেলার নয়টি ইউনিয়নেই নৌকার ব্যবহার হয়। তার মধ্যে হাটুরিয়া-নাকালিয়া ইউনিয়ন, কৈটলা, নতুন ভারেঙ্গা, পুরান ভারেঙ্গা, নগরবাড়ী, রূপপুর, ঢালারচর এসব ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি ব্যাবহার হয়।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ইতোমধ্যেই চরগুলের বেশিরভাগ এলাকা ডুবে গেছে। উপজেলার নাকালিয়া বাজার সংলগ্ন যমুনা নদীর পারে পুরাতন নৌকা মেরামত করতে ব্যস্ত সময় পার করছে নৌকা কারিগররা। এ উপজেলায় প্রায় ২৫-৩০ টি কারখানায় নৌকা তৈরী হয়। যেসমস্থ নৌকা ব্যবহারের একেবারেই অনুপযোগী সেগুলোর কাঠ দিয়ে তৈরী করছে চৌকি। নৌকার কাঠের তৈরী চৌকি খুব টেকশই হওয়ায় এর চাহিদা ও দাম বেশি।

নৌকার মিস্ত্রী ফজলাল জানান, বর্ষা আসার আগেই প্রায় সব নৌকাই ঠিকঠাক করে আলকতড়া দেয়া হয়। আর একেবারেই ভাঙ্গাচোরা নৌকার কাঠ দিয়ে আমরা চৌকি বানায়ে বিক্রি করি। তিন হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকার চৌকি এহানে পাওযা যায়। এই চৌকি ৫০-৬০ বছরেও ঘুনেও খায়না নষ্টও হয় না।

নৌকা কিনতে আসা চরনাগদাহ চরের বাসিন্দা শেখ আলী জানান, দুই সপ্তাহ আগেই নৌকা কিনার দরকার আছিল এহন না কিনে আর পারছি না। গরুর ঘাস কাটা মাছ ধরা ও পারাপাড়ের জন্য নৌকা কিনতে আসছি নৌকা ছাড়া বর্ষায় আমরা অচল।

আনন্দবাজার/ডব্লিউ এস/এ কে

সংবাদটি শেয়ার করুন