ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পিএসের করোনা ক্ষতিপূরণের আবেদন খারিজ

সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া দেশের প্রথম চিকিৎসক মঈন উদ্দীনের পরিবার সরকারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে পেতে যাচ্ছেন ৫০ লাখ টাকা। কিন্তু স্বাস্থ্যমন্ত্রীর একান্ত সচিব (পিএস) করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরও তার ক্ষতিপুরণের আবেদন খারিজ করে দেয়া হয়েছে।

এদিকে, গত ৫ এপ্রিল চিকিৎসক মঈন উদ্দীনের করোনা পজিটিভ আসে। অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকলে ৭ এপ্রিল তাঁকে সিলেট নগরীর শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আইসোলেশনে রাখা হয়। সেখান থেকে পরবর্তীতে পরিবারের সিদ্বান্ত অনুযায়ী তাঁকে ঢাকায় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই তিনি মারা যান।

অন্যদিকে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার সাথে সম্পৃক্ত সরকারি চাকরিজীবী যাঁরা নিজেরা আক্রান্ত হবেন বা মারা যাবেন, তাঁদের জন্য গ্রেড অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দিতে সরকার একটি পরিপত্র করেছে। যার পরিমাণ ৫ লাখ থেকে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত। মঈন উদ্দীনের গ্রেড অনুযায়ী (পঞ্চম গ্রেড) তাঁর পরিবার সরকারের পক্ষ থেকে ৫০ লাখ টাকা পাবেন। সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে ড. মঈনের পরিবারই প্রথম ক্ষতিপূরণ পেতে যাচ্ছে।

চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে তাঁদের জন্য বরাদ্ধ রাখা হয়েছে ৫০০ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরেও একই উদ্দেশে রাখা হচ্ছে ৮০০ কোটি টাকা। তবে ভিন্ন এক আবেদন অর্থ বিভাগ বিবেচনা করছে না বলে জানা গেছে। সে আবেদনটি হচ্ছে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিকের একান্ত সচিব (পিএস) ওয়াহেদুর রহমানের। তিনি করোনায় আক্রান্ত হলেও পরে সুস্থ হয়ে গেছেন। গ্রেড অনুযায়ী আক্রান্ত হওয়ার কারণে তাঁর ১০ লাখ টাকা পাওয়ার কথা। কিন্তু স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় তাঁর আক্রান্তের খবর এতদিন গোপন রেখেছিল। তাছাড়া কোনো হাসপাতালে চিকিৎসাও নেননি তিনি। নাকচ করার ব্যাপারে অর্থ বিভাগ অন্য কারণের সাথে এটাকেও বিবেচনায় রেখেছে বলে জানা গেছে।

জারি হওয়া পরিপত্রের শর্তের সাথে ওয়াহেদুর রহমানের আক্রান্তের বিষয় মিলছে না বলেও জানান অর্থ মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা। ওয়াহেদুর রহমানের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন ধরেননি। বিষয়বস্তু উল্লেখ করে খুদে বার্তা পাঠালেও কোনো জবাব দেননি তিনি। আর স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমান খান জানান, ‌‘আমি শুধু চিকিৎসকদের বিষয় দেখি। আর ওয়াহেদুর রহমান পেশায় একজন প্রশাসন ক্যাডারের। তিনি কখনো এ বিষয়ে কিছু জানাননি।’ তিনি জানান, আমারা জানা মতে, করোনায় মারা যাওয়া সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে ড. মঈনের পরিবারই প্রথম ক্ষতিপূরণ পেতে যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১৯ জন চিকিৎসক কোভিডে আক্রান্ত বা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। এর মধ্যে ১৫ জনের করোনা পজিটিভ ছিল আর ৪ জন করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান। এ ছাড়া দুজন নার্স এবং দুজন কমিউনিটি হেলথকেয়ার সার্ভিস প্রোভাইডারও মারা গেছেন। এখন পর্যন্ত ৮৪৮ জন চিকিৎসক, ৬৭৬ জন নার্স এবং চিকিৎসার সাথে সম্পর্কিত আরও ১ হাজার ১৩৪ জনের করোনা পজিটিভ এসেছে।

আনন্দবাজার/শাহী

সংবাদটি শেয়ার করুন