করোনা চিকিৎসায় বিস্ময়কর সাফল্য দেখিয়েছে পরজীবীনাশক ওষুধ ইভারমেকটিন। এই ওষুদ নিয়ে ইতোমধ্যে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। আর এতে যে সাফল্য এসেছে তা ছিল বিস্ময়কর। এমনকি বাংলাদেশেও করোনা চিকিৎসায় এ ওষুধ ব্যবহারে সাফল্য পাওয়া গেছে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, মহামারির এ সময়ে সার্স থেকে শুরু করে করোনা চিকিৎসায় এটি হবে একটি নতুন সম্ভাবনা। বিভিন্ন দেশে এ ওষুধ ব্যবহারে যে সব ডাক্তার জড়িত তারা বলছেন, ইভারমেকটিন প্রয়োগের সঙ্গে সঙ্গেই রোগীর জীবানু সংক্রমণ কমতে শুরু করে। এটি এখনও করোনা চিকিৎসায় অনুমোদিত না হলেও ডাক্তাররা বলছেন, ফলাফল নাটকীয়।
যুক্তরাষ্ট্রের পাম বিচ কাউন্টিতে জরুরি মেডিক্যাল চিকিৎসক ডা. পেটার এইচ হিবার্ড এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আমরা আশাবাদী করোনা চিকিৎসায় এ ওষুধের দারুণ সম্ভাবনা আছে। আশা করছি আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর কভিড-১৯ চিকিৎসায় এটি যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রশাসনের (এফডিএ) অনুমোদন পাবে। অনেক দেশেই এটি চিকিৎসকদের নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে। পরজীবীনাশক এ ওষুধ রোগীদের প্রথমে মুখে এক ডোজ দেয়া হয়। তার ৭ দিন পর আরেক ডোজ দেয়া হয়।
জ্যঁ-জ্যাক রাজটের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউর্ড হেলথ মেডিক্যাল সেন্টারের একদল চিকিৎসক ইভারমেকটিন এর ওপর একটি প্রতিবেদন দিয়েছেন। তাতে তারা বলেছেন, ২৫০ জন করোনা রোগীর ওপর পরীক্ষা করে নাটকীয় ফলাফল পেয়েছি আমরা। রোগীরা সুস্থ হতে শুরু করে এ ওষুধ প্রয়োগের সঙ্গে সঙ্গেই। এতে মৃত্যু শয্যায় থাকা রোগী ২৪ ঘন্টায় স্থিতিশীল হয়েছে এবং এক সপ্তাহ পর হাসপাতাল থেকে রিলিজ পেয়েছে।
বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. তারেক আলম তাঁর একজন সহযোগী চিকিৎসককে নিয়ে প্রায় দেড় মাসের গবেষণায় এ ওষুধে সাফল্য পেয়েছেন। ডা. আলম জানান, তাঁরা ইভারমেকটিনের সিঙ্গল ডোজের সঙ্গে অ্যান্টিবায়োটিক ডক্সিসাইক্লিন প্রয়োগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মাত্র তিন দিনে ৫০ শতাংশ লক্ষণ কমে যাওয়া আর চার দিনে করোনাভাইরাস টেস্টের রেজাল্ট নেগেটিভ আসার বিস্ময়কর সাফল্য পেয়েছেন।
ডা. তারেক আলম বলেন, এটি আমাদের কাছে রীতিমতো বিস্ময়কর লেগেছে। আরও আগে যদি আমরা এই ওষুধ নিয়ে কাজ করতাম, তবে এত দিনে হয়তো অনেককে হারাতে হতো না। এই ওষুধ দুটি এর আগেও সার্স মহামারির সময় ব্যবহার করা হয়েছিল। আমি নিশ্চিত করেই বলছি, এই ওষুধ দুটির সম্মিলিত ব্যবহারে করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত অন্য দুটি ওষুধ হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ও রেমডিসিভিরের চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর ফল পাওয়া যাবে।
আনন্দবাজার/ডব্লিউ এস