ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে আনোয়ারা উপকূলীয় রায়পুর ইউনিয়নের ৫ গ্রাম প্লাবিত হয়ে বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে ভেসে গেছে। দুর্দশাগ্রস্ত হয়েছে হাজারো মানুষ। ঠিকাদার সংস্থার নিয়ম ও নিম্নমানের কাজের অভিযোগ নিয়ে সদ্য নির্মিত বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে এসব গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও প্লাবিত হয়েছে মাছের ঘের ও ফসলের ক্ষেত।
রায়পুর গ্রামের বাসিন্দা মো.শহিদ আনন্দবাজারকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় আসার কথা শুনে আমাদের ভয়ছিল বাঁধ নিয়ে। কারণ, রায়পুর থেকে বার আউলিয়া গ্রাম হয়ে ধলঘাট পর্যন্ত বেড়িবাঁধের কাজ শেষ না করে চলে যায় কর্তৃপক্ষ। সেই ভয় শেষ পর্যন্ত সত্য হলো। গতকাল মধ্যরাত থেকে পানি বেড়িবাঁধের খোলা অংশ দিয়ে ঢুকতে শুরু করলে আমরা পরিবারের সবাইকে নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যায়।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জুবায়ের আহমদ জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফেলতিতে বেড়িবাঁধের কাজ শেষ না হওয়ায় গ্রামগুলো প্লাবিত হয়েছে। সময় মতো রায়পুর থেকে বারআউলিয়া গ্রাম পর্যন্ত বেড়িবাঁধের কাজ শেষ করতে পারলে পানি এইভাবে ঢুকতে পারতো না। তবে পরিস্থিতি দেখে গতরাতেই তাৎক্ষণিকভাবে এক দেড়শ পরিবারকে সাইক্লোন সেন্টারে নিয়ে গেয়েছি।
রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানে আলম বলেন, ১৩৫০ মিটার বেড়িবাঁধের কাজ গত তিন বছরে শেষ করতে পারেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড। যেটুকু করেছে সেখানেও ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের সামগ্রী। এই বাঁধ কখনো সমুদ্রের শক্তিশালী ঢেউয়ের মোকাবিলা করতে পারবে না। ব্লক দিয়ে সড়ক থেকে আট ফুট উঁচু বেড়িবাঁধ করার কথা থাকলেও সেখানে দেওয়া হচ্ছে মাত্র দুই ফুটের ব্লক। কাজের অনিয়ম নিয়ে স্থানীয়রা বিভিন্নভাবে প্রতিবাদ জানালেও কর্তৃপক্ষ কোন প্রকার কর্ণপাত করেনি। যার কারণে নির্মান শেষ হওয়ার আগেই এই বেড়িবাঁধে ধস নেমেছে।
এই বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী তয়ন কুমার ত্রিপুরা আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় কাজ শেষ করা যায়নি বলে উল্লেখ করে বলেন, জলোচ্ছ্বাসে নতুন করে বাঁধের কোনো অংশের ক্ষতি হয়নি। আশাকরি খুব শীঘ্রই অসামাপ্ত কাজ শেষ করা হবে।
আনন্দবাজার/শাহী