সম্প্রতি বাংলাদেশের সুন্দরবন এলাকা দিয়ে আজ (বুধবার) আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভির তথ্য সুত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে ঘণীভূত হয়ে ঝড়টি গত ৩ দিনে নিজের শক্তি সঞ্চয় করে ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে।
এই ব্যাপারে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, ঝড়ের সময় স্বাভাবিকের চেয়ে ১০ থেকে ১৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। ব্যাপক ভাবে বাংলাদেশের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় আম্পানের জন্য দেশের ১৪ জেলা ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। তাই এসব জেলায় ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেওয়া হয়েছে।
আম্পানের কারণে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ এবং সিলেট বিভাগের বেশিরভাগ স্থানে অস্থায়ী দমকা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।
ইতিহাস ঘেঁটে জানা গেছে বাংলাদেশে এর আগেও ৫টি ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছে। ওইসব ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে অনেক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন সেই সাথে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থও হয়েছিল।
১৯৬০-২০১৭ সাল পর্যন্ত মোট ৩৩টি বড় ঘূর্ণিঝড় ঘটনার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু আবহাওয়া অধিদফতর ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ শুরু করে ২০০৭ সাল থেকে। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় হিসেবে বিবেচনা করা হয় ১৯৭০ এবং ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়কে।
১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর সবোর্চ্চ ২২৪ কিলোমিটার বেগে চট্টগ্রামে আঘাত হেনেছিল এবং জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা হয়েছিল ১০-৩৩ ফুট। ১৯৭০ সালের হিসেব অনুযায়ী সালের এই ঘূর্ণিঝড়ে ৫ লাখ মানুষ মারা যায়।
১৯৯১ সালের ২৯-৩০ এপ্রিলের ঘূর্ণিঝড়কে বলা হয় ‘শতাব্দীর প্রচণ্ডতম ঘূর্ণি ঝড়’। যে ঝড়ে ১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানা যায়।
১৯৮৫ সালের ঘূর্ণিঝড়টি উরিরচরের ঘূর্ণিঝড় নামেই সবাই জানে। এই ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসের গতিবেগ ছিল ১৫৪ কিলোমিটার। তবে এটা অল্প স্থানে হয়েছিল। যার ফলে ক্ষয়ক্ষতি খুব বেশি হয়নি।
২০০৭ সালের ১৫ই নভেম্বর খুলনা-বরিশাল উপকূলীয় এলাকায় ১৫-২০ ফুট উচ্চতার ঘূর্ণিঝড় সিডর বাতাসের ২২৩ আঘাত হানে গতিবেগে আঘাত হানে। তবে ই ঝড়ে মানুষের মৃত্যুর সংখা ছিল কম। তবে অবকাঠামোগত অনেক ক্ষতি হয়েছে, বাড়িঘর ভাসিয়ে নিয়ে গেছে।
ঘূর্ণিঝড় আইলার, ২০০৯ সালের ২৫শে মে পশ্চিমবঙ্গ-খুলনা উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় আইলার বাতাসের গতিবেগ ছিল ৭০-৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ১৯৭০ এবং ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে।
আনন্দবাজার/এইচ এস কে