ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কক্সবাজারে ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবেলায় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন

সুপার সাইক্লোনে পরিনত হয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। এটি ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের চেয়েও শক্তিশালী। বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২২৫ কিলোমিটার। আম্পানের প্রভাবে ১০ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা বিরাজ করছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের দুপুর সাড়ে ১২টার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সুপার সাইক্লোন আম্পান চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮১০, কক্সবাজার উপকূল থেকে ৭৬৫ এবং মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ সন্ধ্যা থেকে আগামীকাল বুধবার সন্ধ্যার মধ্যে খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

প্রাকৃতিক এই দুর্যোগ মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে কক্সবাজারের প্রশাসন। প্রস্তুত রয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র, মুজিব কিল্লা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হোটেল মোটেল, মেডিকেল রেপিড রেসপন্স টিম, সিপিবির স্বেচ্ছাসেবক, রেড ক্রিসেন্টের টিম, শুকনো খাবার, পর্যাপ্ত ওষুধসহ সবকিছু।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব, সম্ভাব্য দুর্যোগ পরিস্থিতিতে জরুরী সাড়াদানের লক্ষ্যে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা জুম কনফারেন্সের মাধ্যমে জেলা প্রশাসকের অফিস কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৫৭৬টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র। ২৫ টি মুজিব কিল্লা। সেই সাথে এখন স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ থাকায়, এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ও আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।এর পাশাপাশি কক্সবাজার শহরে থাকা চার শতাধিক হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউজের বেশকিছু হোটেল-মোটেলকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য।

তিনি বলেন, ৫৭৬ টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ২৫ টি মুজিব কিল্লা-ই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ৫ লাখ ৭৮ হাজার মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে।

জেলাপ্রশাসক আরোও বলেন,যেহেতু এখন করোনা মহামারী আকার ধারণ করেছে, সে বিষয়টি মাথায় রেখে সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। অবস্থার অবনতি হলে নিচু এলাকায় বসবাসকারী মানুষকে নিরাপদে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসার জন্য যানবাহন প্রস্তুত রাখা হয়েছে। শুকনো খাবার আর পর্যাপ্ত ওষুধ মজুদ রয়েছে বলেও জানান জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন।

কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডাক্তার মাহবুবুর রহমান জানান, ৭১টি মেডিকেল টিম, ৮ টি রেপিড রেসপন্স টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। রয়েছে পর্যাপ্ত ঔষধ। রোববার থেকে ৮ টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।কক্সবাজার সদর হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের একটি টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলেও জানান সিভিল সার্জন।

সভায় কক্সবাজার জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক আবু হেনা মোস্তফা কামাল, কক্সবাজার জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা মাহবুব আলম ও পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন তাদের নিজ নিজ প্রস্তুতির বিষয়ে তুলে ধরে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার কথা জানান।

আনন্দবাজার/শাহী

সংবাদটি শেয়ার করুন