আর একজন রোহিঙ্গাকেও বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়া হবে না এমন ঘোষণা পর বঙ্গোপসাগর থেকে তিনশতাধিক রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে ভাসানচরে পাঠানোর ব্যাখ্যা দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা ট্রলারে করে বাংলাদেশের ভিতরে ঢুকে পড়েছিল। উত্তাল বঙ্গোপসাগরে না খেয়ে মারা যাচ্ছিল তাঁরা। কোন মানুষ মারা যাক’ আমরা তা চায় না বলেই ভাসমান রোহিঙ্গাদের উদ্ধার করে ভাসানচরে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা ব্রিটিশ হতে চাই না। একসময় ব্রিটিশরা ভারতীয় সৈন্যদের কানাডায় ব্যাঙ্কুবারে নিয়ে গিয়েছিল। তৎকালীন না খেয়ে সাগরে ১৮৯ সৈন্য সবাই মারা যায়। আমরা এত অমানবিক নয়। এ কারণে সাগর থেকে উদ্ধার করে রোহিঙ্গাদের প্রাণ বাঁচানো হয়েছে। রবিবার (১০ মে) রাতে মুঠোফোনে প্রতিবেদককের কাছে এ এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবারও একজন রোহিঙ্গাকেও আশ্রয় দেয়া হবে না উল্ল্যেখ করে বলেন, যে সকল দেশ রোহিঙ্গাদের বোঝা বাংলাদেশকে চাপিয়ে দিতে চায়, তাঁরাই মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিক।
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক রোহিঙ্গা বোঝাই একাধিক ট্রলার কোথাও আশ্রয় না পেয়ে সাগরে ভাঁসার খবরে তাঁদের আশ্রয় দিতে বাংলাদেশকে অনুরোধ জানান, জাতিসংঘ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা। জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন আর একজন রোহিঙ্গাকেও বাংলাদেশ আশ্রয় দেবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশও মানবিক কারনে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে আহ্বান জানালে,পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্টো মানবিক কারনে যুক্তরাষ্ট্রসহ অনুরোধকারী দেশ গুলোকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে পাল্টা প্রস্তাব দেন।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনশতাধিক রোহিঙ্গাকে মানবিক কারনে কবুল করেছে বাংলাদেশ। গত বুধবার ৭ মে মধ্যরাতে সেন্টমার্টিনের অদূরে বঙ্গোপসাগরে ভাসতে থাকা ২৭৯ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে পরেরদিন ভাসানচরে পাঠানো হয়। নারী ও শিশুসহ ওই রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে তৈরি একটি ট্রলারে সেন্ট মার্টিনের কাছাকাছি ভাঁসছিল বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী।
এর আগে প্রথমবারে মত ২৮ জন রোহিঙ্গাকে একইভাবে উদ্ধার করে ভাসানচরে পাঠানো হয়। এ পর্যন্ত দুই দফায় ৩০৭জন রোহিঙ্গা ভাসানচরে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আনন্দবাজার/শাহী