বোরো ধান কেটে ঘরে তোলার জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন সুনামগঞ্জের কৃষাণ-কৃষাণীরা। শ্রমিক সংকট না থাকায় সুনামগঞ্জের বোরো ধান কাটা প্রায় শেষের দিকে। একই সঙ্গে আকাশ রৌদ্রজ্জ্বল থাকায় কাটা ধান ও শুকানোর কাজও করা গেছে সহজে।
সুনামগঞ্জ কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, এ পর্যন্ত জেলায় আবাদকৃত ২ লাখ ১৯ হাজার ৩০০ হেক্টর জমির মধ্যে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমির ধান কাটা শেষ। এর মধ্যে হাওরে ৮০ ভাগ, হাওরের বাইরে ২৯ ভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে। গড়ে জেলায় ৬৭ ভাগ বোরো ধান কাটা শেষ হয়েছে। এই সপ্তাহেই হাওরের ধান কাটা শেষ হবে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
এদিকে কৃষকরা জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহ ধরে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ধান কাটা, মাড়াই ও শুকানো চলছে সমান গতিতে। শ্রমিক সংকট না থাকায় ধানও কাটা হয়ে যাচ্ছে তারাতাড়ি। এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে দুই দিনের বৃষ্টি ও কালবৈশাখি ঝড়ে কৃষকদের মধ্যে ভীতি দেখা দেয়। তবে এর পরেই আবহাওয়া অনুকুলে চলে আসে যা এখনো বহাল। এ কারণে প্রতিটি হাওরেই সমান গতিতে ধান কাটা চলছে। করোনার ভয় উপেক্ষা করে কষ্টের বোরো ধান গোলায় তুলতে কৃষক কিষাণী এখন মাঠেই অবস্থান করছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, টগা, শনি, হাসুয়া, টাংগুয়া হাওরে গিয়ে দেখা যায়, এই হাওরের বেশিরভাগ ধানই কাটা শেষ। হাওরের ঝাউয়ার অংশ, গছিলাড়া অংশসহ কিছু অংশেল ধানকাটা প্রায় শেষ। এখন বিস্তৃত খোলা কান্দায় গড়ে ওঠা খলায় যন্ত্রে ধান মাড়াই করছেন কৃষক। কিষাণীরা খলায় ধান শুকাচ্ছেন। অনেকে শুকানো ধান গরুর গাড়ি, মহিষের গাড়িসহ ভ্যান গাড়ি করে নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে।
শনির হাওরে আসান পুর গ্রামের কৃষক মাসুম মিয়া বলেন, আমি ২২ কেয়ার জমিতে ধান লাগিয়ে ছিলাম। এর মধ্যে ১৮ কেয়ার জমির ধানই কেটে নিয়েছি। কাটা ধান মাড়াই শেষে শুকানোর কাজও প্রায় শেষ। এই সপ্তাহেই বাকি ক্ষেতের ধান কাটা শেষ হবে।
সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সফর উদ্দিন বলেন, আমাদের দুশ্চিন্তা কেটে গেছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় দ্রুত গতিতে ধান কাটা, মাড়াই ও শুকানোর কাজ চলছে। এই সপ্তাহেই ধান কাটা শেষ হবে। অবশিষ্ট ফসল পাহাড়ি ঢল ও বন্যার ঝুঁকিতে নেই।
আনন্দবাজার/শহক