ত্রাণ ও অর্থ সহায়তার দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ প্রায় আধা ঘন্টা বিক্ষোভ করেছেন গণপরিবহন শ্রমিকরা। শুক্রবার (১’লা মে) সকাল ১১টা থেকে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে শিমরাইল মোড় (চিটাগাংরোড) এলাকায় মহাসড়কে শতাধিক পরিবহন শ্রমিক এ বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
এসময় সড়কের দুই দিকে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে টহলে থাকা সেনাবাহিনী এবং পুলিশ এসে শ্রমিকদের সাথে কথা বলে স্থানীয় প্রতিনিধিদের মাধ্যমে ত্রাণ সহায়তার নেওয়ার পরামর্শ দেন। পরে শ্রমিকরা সড়ক থেকে সরে যায়। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের অভিযোগ, লকডাউনের কারণে পরিবহন বন্ধ থাকায় তারা বেকার সময় কাটাচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার ত্রাণ সহায়তা পাচ্ছেন না। এতে তাদের পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ত্রাণের দাবিতে তারা বাধ্য হয়েই সড়কে নেমেছেন।
মালিক সমিতির উদ্দেশ্যে শ্রমিকদের অভিযোগ, দেশের বর্তমান পরিস্থিতির আগে মালিক সমিতি কর্তৃক শ্রমিকদের কল্যাণ তহবিলের নামে চাঁদা নেওয়া হতো।আজকের এই দূর্দিনে সংগঠন থেকে কোন ধরনের সহায়তা আসছেনা কেন?
এর আগে ভোটার আইডি কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফটোকপি নেয়া হয়েছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তারা কোনো ত্রাণ সহায়তা পায়নি। এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়ন (বি-২৩০২) এর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এস এম মাসুদ রানা এবং সিকিম আলী’র নেতৃত্বে শ্রমিকরা এতে অংশ নেয় বলে জানিয়েছে শ্রমিকরা। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেন এস এম মাসুদ রানা।
তিনি বলেন, মহামারী করোনা ভাইরাসের কারনে লকডাউন পরিস্থিতিতে গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। এতে পরিবহণ শ্রমিকরা কর্মহীন হয়ে পড়েছে। এ কারণে তাদের খাদ্য ও অর্থ সহায়তা প্রয়োজন। এবিষয়ে আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে গত ২০ এপ্রিল জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছি। নিজে অসুস্থ জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা কাউকে সড়ক অবরোধ করতে বলিনি। সড়ক অবরোধের বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। তবে আমাদের পক্ষ থেকে স্থানীয় প্রতিনিধির সাথে ত্রাণের বিষয়ে যোগাযোগ করতে পরিবহন শ্রমিকদের বলা হয়েছিল। যদিও অবরোধে অংশ নেয়া অনেক শ্রমিকই বলেছেন মাসুদ রানা ও সিকিম আলী নামে দুই শ্রমিক নেতা তাদেরকে এখানে নিয়ে এসেছেন।
উল্লেখ্য, এই সংগঠনের নেতৃত্বে গত কয়েক বছর ধরে শিমরাইল মোড়ে গণপরিবহনের কার্যক্রম চলে আসছিল। গত বছরের ৩ জুলাই র্যাব-১১ উক্ত মাসুদ রানাসহ ৪ জন পরিবহণ চাঁদাবাজকে শিমরাইল এলাকায় পরিবহণে চাঁদাবাজির সময় গ্রেফতার করেছিল। সেসময় র্যাব-১১ জানিয়েছিল, উক্ত মাসুদসহ চাঁদাবাজ চক্রটি প্রতিদিন পরিবহন ও অন্যান্য খাত থেকে চাঁদা আদায় করত।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) কামরুল ফারুক বলেন, ত্রাণের দাবিতে মটর শ্রমিকেরা শীমরাইল মহাসড়ক বন্ধ করে বিক্ষোভ করেছিল। তারা দাবি করেছে, কোনো ত্রাণ তারা পয়নি। পরে তাদেরকে বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ঘটনাস্থলে কোনো রকম অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
আনন্দবাজার/শাহী