করোনার প্রভাবে কচু সেদ্ধ খেয়ে জীবন পাড় করছেন ৮০ বছরের বয়োবৃদ্ধ নমিতা বিশ্বাস। সরকারি ত্রান না পেলেও কারো কাছে ভিক্ষা চায় নি এই বয়স্ক মহিলা। ফলে কচু খেয়েই বেঁচে আছেন তিনি।
বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার হিজলা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের শান্তিপুর গ্রামের মৃত সন্তোষ বিশ্বাসের স্ত্রী নমিতা। তার দুই ছেলের মধ্যে একজন বেঁচে আছে। ভ্যানচালক ছেলে স্ত্রীকে নিয়ে পৃথক থাকে। বেঁচে থাকার জন্য তাই বয়োবৃদ্ধ নমিতাকে একাই লড়াই করতে হয়। তিনি আরো জানান, মাঝে-মধ্যে বয়স্ক ভাতার টাকা পান। সর্বশেষ পেয়েছেন গত অগ্রহায়ণ (ডিসেম্বর) মাসে। যতদিন বাঁচবেন এভাবে সংগ্রাম করেই বাঁচতে চান নমিতা। তবু ভিক্ষা করবেন না। কারো কাছে মাথা নোয়াতে নারাজ তিনি।
নমিতা বিশ্বাস জানান, ‘তিন-চার দিন ধইরে কচু সেদ্ধ খাইয়ে বাঁচতিছি! আগে তো বাগান-ঘাটের শাক খুঁটে নিয়ে হাটবাজারে ব্যাচতাম। তাই দিয়ে একার সংসার চইলে যাতো। এহন তো তা পাত্তিছি নে। তাই কচু সেদ্ধ খাচ্ছি।
তিনি আরো জানান, করোনার কারণে বাজার বন্ধ। তাই শাক বেচাও বন্ধ। কিন্তু সরকারি কোনো ত্রাণ বা খাবার এখনো পাইনি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. বাদশা শেখ জানান, নমিতা বিশ্বাস সরকারি ত্রাণ পাননি। কারণ বরাদ্দ পর্যাপ্ত নেই। তাই নমিতার মতো মানুষদের প্রয়োজনীয় সাহায্য করা যাচ্ছে না। তার ওয়ার্ডে প্রায় আটশ পরিবারের মধ্যে সাড়ে সাতশ পরিবার ত্রাণ পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু এ পর্যন্ত সরকারি ত্রাণ বরাদ্দ পেয়েছেন ৬৫ পরিবার। তার ওয়ার্ডে সরকারি গুচ্ছগ্রামের শতাধিক পরিবারসহ দলিত শ্রেণির অসংখ্য মানুষ রয়েছে। যারা দিন আনে দিন খায়। তাদের সহায়তা করা প্রয়োজন।
সরকারি ত্রাণ না পেলেও প্রায় দুই সপ্তাহ আগে স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছ থেকে নমিতাকে কিছু খাবারের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন বলে জানান ইউপি সদস্য বাদশা শেখ।
আনন্দবাজার/রনি